কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেটে সোমবার (৭ এপ্রিল) ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচির সুযোগে কয়েকটি দোকান ও রেস্টুরেন্টে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুষ্কৃতারীরা। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোট ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সর্বশেষ বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে লুট করা জুতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কওমি কণ্ঠকে তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক।
জানা গেছে- হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় মহানগরের মীরবক্সটুলা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত রয়েলমার্ক হেটেলের ম্যানেজার (অপারেশন) আব্দুল মতিন সরকার বাদী হয়ে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। রয়েলমার্ক হোটেলের দ্বিতীয় তলায় ছিল কেএফসি। মামলার এজহারে তিনি নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার লুট হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ভাঙচুরে হোটেলের ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।
অপরদিকে, মহানগরের দরগাহ গেইট এলাকার জুতার কোম্পানি বাটার শো-রুমের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত ৮ শ জনকে।
ওসি মো. জিয়াউল হক কওমি কণ্ঠকে বলেন- আসামিরা ভাসমান ও বিভিন্ন কলোনির বাসিন্দা। জনসমাগমের সুযোগে লুটপাট ও ভাঙচুর চালিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও অনলাইনে জুতা বিক্রির বিজ্ঞাপন সূত্রে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২২ জনের মধ্যে ২০ জনকে মঙ্গল ও বুধবার আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাকি দুজনকে আজ (বৃহস্পতিবারা) আদালতে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি টানা বর্বর হত্যাযঞ্জের প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একদল দুষ্কৃতকারী সিলেট মহানগরের মিরবক্সটুলায় অবস্থিত কেএফসি রেস্টুরেন্টে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় রেস্টুরেন্টের ভিতরে থাকা বিভিন্ন কোমল পানীয় নষ্ট করা হয়।
প্রায় একই সময়ে মহানগরের দরগাহ গেইট এলাকায় জুতার কোম্পানি বাটার শো-রুমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও পারেনি। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ঘটনার দিন রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
নির্দেশনায় তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ আছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশ বর্তমানে এ নিয়ে কাজ করছে।’
আইজিপি আরও বলেন, ‘সরকার কোনো ন্যায়সঙ্গত বিক্ষোভে বাধা দেয় না। তবে, প্রতিবাদ কর্মসূচির আড়ালে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।’