শাপলা চত্বরে হাসিনাবাহিনীর তাণ্ডব, কতজন মা রা গিয়েছিলেন?

কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :

২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে। রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। সমাবেশ দমাতে এক পর্যায়ে নিরস্ত্র মানুষের ওপর লাইট নিভিয়ে দিয়ে রাতের অন্ধকারে গুলি চালায় স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ডে কতজন মারা গেছেন তা নিয়ে এখনো জনমনে প্রশ্ন আছে। এবার আলোচিত সেই হত্যাকাণ্ড নিয়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চারদফা দাবিতে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ মহাসমাবেশ করছে হেফাজতে ইসলাম। যা সফল করতে ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এই সমাবেশে যোগ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এই সমাবেশ দেখেই হেফাজতের শাপলা চত্বরের কথা মনে পড়েছে উপ-প্রেস সচিবের।

হেফাজতের শাপলা চত্বরের সমাবেশে চালানো হত্যাকাণ্ড নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন্য নিজের করা একটি অনুসন্ধানের কথা তুলে ধরেছেন আজাদ মজুমদার। যেখানে তার প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডে নিহতের সংখ্যার কথাও জানানো হয়েছে।

উপ-প্রেস সচিব তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যখনই আমি হেফাজতে ইসলামকে কোনো বড় বিক্ষোভ করতে দেখি, তখনই আমার মনে পড়ে যায় শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডের ওপর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন্য আমার অনুসন্ধানের কথা। যখন গোটা বিশ্ব এই গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল, তখন আমি ঢাকায় বিবিসির প্রাক্তন সংবাদদাতা মার্ক ডামেটের সঙ্গে চ্যালেঞ্জিং কাজটি গ্রহণ করি।’

অনুসন্ধানের রিপোর্ট নিয়ে আজাদ মজুমদার বলেন, ‘আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে দুই দিনের সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাত সদস্যসহ কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়েছেন।’

শাপলা চত্বর নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে কতটা ঝুঁকি নিতে হয়েছিল সেই কথা তুলে ধরে আজাদ মজুমদার লেখেন, ‘আপনারা যারা এখন সাংবাদিকতার জগতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, মানবাধিকার রক্ষা করছেন, তারা হয়তো কল্পনাও করতে পারবেন না যে কাজটি কতটা কঠিন ছিল। দুই সপ্তাহ ধরে চলা তদন্তের সময়, রাস্তাঘাট, হাসপাতালের লগবুক খুঁজে, নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এবং কবরস্থানের প্রমাণ সংগ্রহ করে, মানুষকে খোলাখুলিভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে, আমি সবসময় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরে পড়ে যাওয়ার এবং নিখোঁজ হওয়ার ভয়ে থাকতাম।’

তিনি তার পোস্টের শেষাংশে লিখেন, ‘নিরাপত্তার কারণে, আমি আগে কখনও আমার কাজের কৃতিত্ব দাবি করতে পারতাম না, কিন্তু যখনই আমি দেখি যে কোনও সহকর্মী সাংবাদিক আমার কাজকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করছেন, তখন তা আমাকে সত্যিই আনন্দ দেয়।’