কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন- আমরা যা করেছি তা দেশের ইতিহাসে হয় নাই। কম সময়ে আমরা যে পরিবর্তন করেছি, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার যদি তা ধরে রাখে তাহলে দেশে ন্যায়বিচার বৃদ্ধি পাবে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের আইনগত প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি বাড়বে। স্বল্প ও কম খরচে দ্রুততম সময়ে যে কেউ আইনি প্রতিকার পাওয়ার সুযোগও তৈরি হবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটে দেশের ১২ জেলায় মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান কার্যকরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, দেখবেন সবার তো সোস্যাল মিডিয়া আছে, যার যেরকম চায় বলা যায়। আপনারা প্রায়ই দেখবেন বলবে আপনারা কি করছেন? মানুষজনের রক্তের উপর আপনাদের বসাইছে। আপনারা কি করছেন। আমি বুঝতে পারি না এর আনসারটা কি? আমিতো ফুটবল প্লেয়ার না বা কোনো মঞ্চ নাটকের অভিনেতা না। আমি যেটা করবো, সেটা আপনারা দেখতে পারবেন। সেটা আপনাকে দেখতে হবে কাজের মধ্যে দিয়ে। এই যে লিগ্যাল এইডের কাজ করলাম। এর বাইরে আমরা অনেক কাজ করেছি, যেটা বাংলাদেশে ইতিহাসে কোনোদিন হয়নি। আমরা সিভিল আদালত এবং ক্রিমিনাল আদালতকে পৃথক করে দিয়েছি। যাতে সিভিল আদালতে মামলার নিষ্পত্তি বাড়ে। তাছাড়া বিচারিক পদ সৃজনের যে ক্ষমতা আগে রাজনৈতিক মন্ত্রীদের কাছে ছিল সেটিকে আমরা প্রধান বিচারপতি কাছে নিয়ে গেছি। সেই ফাইল নিজের হাতে নিয়ে পিয়নের মতো করে স্বাক্ষর করে নিয়ে এসেছি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন- আমরা সিআরপি ও সিপিসি আইনের সংশোধনী এনেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, নারী ও শিশু আদালতের সংস্কারসহ নানা সংশোধনী করেছি, যার কোনো সমালোচনা হয়নি। আমার একার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হতো না। সারা দেশ থেকে সবচেয়ে সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের বেছে এনে মন্ত্রণালয়ে কাজ করাচ্ছি।
মামলার জট কমাতে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগকে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে দরিদ্র মানুষের জন্য অপূর্ব সুযোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কয়েকটি নতুন পরিবর্তন এনেছি। প্রথমত, মামলা দায়েরের আগে লিগ্যাল এইডে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেখানে সমাধান না হলে আদালতে যেতে কোনো বাধা থাকবে না। আর দ্বিতীয়ত, ১১ ধরনের আইন সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যেখানে লিগ্যাল এইডে যাওয়া বাধ্যতামূলক। তৃতীয়ত, আগে লিগ্যাল এইডে দায়িত্বে থাকতেন একজন সিনিয়র সহকারী জজ। এখন থাকবেন সিনিয়র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ।
তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের আমরা যুক্ত করেছি। কারণ তারা শারীরিকভাবে সক্ষম, অভিজ্ঞ এবং সম্মানীয় ব্যক্তি। অল্প সম্মানী নিয়েও তারা এই প্রজেক্টে অংশ নিয়েছেন, এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
মামলার জট কমানো ও মানুষের ভোগান্তি হ্রাসের লক্ষ্য তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের বিশ্বাস এটি ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে মামলার জট অনেকটাই কমবে। বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য এটি হবে ন্যায়বিচার পাওয়ার এক অপূর্ব সুযোগ।