কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
চাচাকে হত্যার প্রতিশোধ নিতেই খুলনার কাউন্সিলর গোলাম রাব্বানী টিপুকে কক্সবাজারে হত্যা করেছেন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পু (২৪)। তিনি পুলিশের কাছে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডে ইনফরমারের ভূমিকায় ছিলেন ঋতু।
তবে পুলিশের দাবি, এলাকায় আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের জন্যই এই হত্যাকাণ্ড। এতে জড়িত তিনজনকে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার কাপনা পাহাড়ি চা বাগান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় গোলাম রাব্বানী টিপুর বন্ধু ও খুলনার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার ওরফে চালু ও কক্সবাজারের ব্যবসায়ী মেজবাহ উদ্দিন ভূট্টোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের দেওয়ানা মোল্লা পাড়ার মো. সেলিম আকনের মেয়ে ঋতু (২৪), একই এলাকার মো. জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৭) ও একই সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের মধ্য কারিগর পাড়ার মো. হায়দার সরদার অদুদের ছেলে গোলাম রসুল (২৫)।
বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ৮ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে গোলাম রাব্বানী টিপু (৫৫), তার বন্ধু শেখ হাসান ইফতেখার ওরফে চালু ও তরুণী ঋতু (২৪) গ্রিনলাইন বাসে ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসেন। ৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের ১২নং ওয়ার্ডের সুগন্ধা পয়েন্টের কাছাকাছি হোটেল সি-গালের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে আসামিরা গোলাম রাব্বানী টিপুকে মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহমেদ পেয়ারের নেতৃত্বে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি বিশেষ টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতারে কাজ শুরু করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে (সদর সার্কেল) ওই আভিযানিক টিম মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি থানা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহর মতে, খুলনা ও রাজশাহী চরমপন্থী ও পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টিসহ বেশ কিছু নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম রয়েছে। তেমনই এক ঘটনায় খুন হয়েছিলেন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পুর চাচা হুজি শহিদ। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গোলাম রাব্বানী টিপু আসামি ছিলেন। এসময় পাপ্পু ছোট ছিলেন। কিন্তু তিনি মানসিকভাবে সেই হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে বড় হয়েছেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাপ্পু বলেছেন, ‘টিপুকে যেখানেই পেতাম, সেখানেই হত্যা করতাম’।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, গোলাম রব্বানী টিপুর ভগ্নিপতি ইউনুস আলী শেখ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সুত্রমতে, ইউনুস আলী শেখও একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি ও গোলাম রব্বানীর স্ত্রী ঘটনার খবর পেয়ে কক্সবাজার এসেছিলেন। তারা ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ খুলনা নিয়ে গেছেন। পরে খুলনাতেই কাউন্সিলর রাব্বানীর লাশ দাফন করা হয়।
মূল রিপোর্ট : আমার দেশ