কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
পবিত্র রমজান মাসে ‘ইফতার-রাজনীতিতে’ মেতে উঠেছে প্রায় সব রাজনৈতিক দল। বাদ নয় ইসলামি দলগুলোও। মুক্ত পরিবেশে এবারের আয়োজনের পরিধি এবং অংশগ্রহণের হার অনেকে বেড়েছে। ইফতারের পাশাপাশি দল গঠন ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডও চালাচ্ছে বিভিন্ন দল। তবে সব কর্মসূচিতেই আগামী নির্বাচনের একটি আবহ কাজ করছে বলে জানা গেছে।
রোজা শুরু হওয়ার আগেই সারাদেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং রমজানের পবিত্রতা রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে ইসলামী আন্দোলন, জমিয়ত ও খেলাফত মজলিসের দুই অংশ এবং জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল। আর রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয়, মহানগর, জেলা-উপজেলা থেকে থানা পর্যায়ে এসব মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর। এ কর্মসূচিতে এগিয়ে রয়েছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকে এমনই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মুক্ত পরিবেশে এবার জামায়াতকে এমন আয়োজন করতে দেখা যাচ্ছে। বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট সরকারের বাধাবিঘ্নের কারণে প্রকাশ্যে ইফতার মাহফিলসহ কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি দলটি।
রমজানে বিশেষ তৎপরতা চালাচ্ছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে দলটির সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত ও শঙ্কামুক্ত ভিন্ন পরিবেশে এবারের রোজায় ইফতার মাহফিল করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এবার বড় ধরনের ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে ৭ মার্চ হোটেল সোনারগাঁয়ে। কূটনীতিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে এই ইফতার অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের প্রতিটি থানায় ইফতার মাহফিল করবে দলটি। সহযোগী সংগঠনগুলোও আলাদা ইফতারের আয়োজন করছে। সারা দেশে জেলা ও থানা শাখার উদ্যোগে গণইফতার আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মহানগরে তৃণমূল মানুষের মাঝে ইফতার ও সাহরির খাবার বিতরণ এবং ঈদ পোশাক বিতরণের পরিকল্পনাও রয়েছে। রোজার আগে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করে দলটি। আগামী নির্বাচনের আগে এবারের রমজানের কর্মসূচিতে ভিন্ন আমেজ বিরাজ করছে বলেও জানান আহমদ আব্দুল কাইয়ুম।
রোজায় সারা দেশে ইফতার মাহফিলের পাশাপাশি কিছু শাখায় দল পুনর্গঠনের কাজ চালাচ্ছে খেলাফত মজলিস। এ প্রসঙ্গে দলটির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মো. আব্দুল জলিল জানান, রোজার আগেই স্বাগত জানিয়ে মিছিল করেছে খেলাফত মজলিস। রোজাজুড়ে ঢাকাসহ সারা দেশে ইফতার মাহফিল করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ৮ মার্চ পল্টনের হোটেল ফারসে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ইফতার।
তিনি বলেন, এবার কোনো বাধাবিঘ্ন নেই। পরিবেশ খুব ভালো। তাই আগের চেয়ে এবার ইফতার আয়োজনসহ অন্যান্য কর্মসূচিও অনেক বেড়েছে। ইফতার ছাড়াও গরিব-অসহায়দের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
একই ধরনের তৎপরতার কথা জানান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ। তিনি বলেন, এবার কেন্দ্রীয় উদ্যোগে ১৪ মার্চ হোটেল ফারসে রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এবারই প্রথম এ ধরনের বড় আয়োজন করছে দলটি।
তিনি বলেন, রমজানে ঢাকা মহানগর এবং সব জেলা-উপজেলায় আলাদাভাবে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সমাজকল্যাণমূলক কাজ হিসেবে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনাও রয়েছে দলটির।
এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলন, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামি দল রমজানে ইফতার মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে।
মূল রিপোর্ট : আমার দেশ