কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. সাদেক আহমদ ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্টজন। তবে ৫ আগস্টের পর ‘খোলস পাল্টাতে’ শুরু করেছেন তিনি। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে দলটির অনেক ত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সিলেটে চলছে আলোচনা-সমালোচানার ঝড়।
এছাড়া স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভও বিরাজ করছে।
জানা যায়, কুমিল্লার বাসিন্দা সাদেক আহমদ শাবিপ্রবিতে ৩০ বছর ধরে চাকরি করছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির সি.ই.পি বিভাগে অফিস সহকারী (উচ্চমান) হিসেবে কর্মরত। আওয়ামী আমলে শাবিপ্রবি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সময় সিলেট আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গড়ে তুলেন সখ্যতা। বিশেষ করে সিলেট সিটি করপোরেশনের অপসারিত মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্টজন বলে নিজের পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন।
পলাতক সরকারের সময়ে নিজের সব ব্যানার-পোস্টারে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ব্যবহার করতেন সাদেক আহমদ। কর্মচারী ইউনিয়নের একটি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর মুজিবুর রহমানের কবরে গিয়ে ফুলও দেন তিনি।
তবে ৫ আগস্টের পর নিজের আগের কর্মকাণ্ড আড়াল করতে কৌশলে সম্পর্ক স্থাপন করতে শুরু করেন বিএনপি নেতাদের সঙ্গে। গত রমজানে আয়োজিত একটি ইফতার মাহফিলে প্রধান করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে। মহানগর বিএনপির শীর্ষ এ নেতার পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সাদেক। এরপর তিনি এই ছবি চাউর করেন নেট দুনিয়ায়।
এছাড়া সম্প্রতি ৩৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির এক অনুষ্ঠানে গিয়ে সাদেক আহমদ স্থানীয় ত্যাগী নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক বক্তব্যও প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন মো. সাদেক আহমদ। তিনি কওমি কণ্ঠকে বলেন- ৭০০/৮০০ কর্মচারী নিয়ে যে ইউনিয়ন, সেটির প্রতিনিধিত্ব করতে হয়েছে আমাকে। তাই বিভিন্ন সময় কর্মচারীদের নায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের স্বার্থে প্রশাসনসহ ওই সময়ের কিছু মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হয়েছে এটা সত্যি। তবে আমি শুরু থেকেই বিএনপির রাজনীতির মতাদর্শী।
তিনি আরও বলেন- আমাদের একটি কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছিলো গোপালগঞ্জে। সেই অনুষ্ঠান শেষে সবাই বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফুল দিতে যান। আমাকেও যেতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির সিলেট ৩৭ নং ওয়ার্ড শাখার আহ্বায়ক চান মিয়া বাচ্চু কওমি কণ্ঠকে বলেন- ৩৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ জন্য সাদেকের কয়েকজন সহযোগীর কাছ থেকে অনুরোধ আসে। আমরা জানতান না- সেদিন সাদেক আহমদ আসেবন। এর বেশি আমাদের সঙ্গে সাদেক আহমদের কোনো সম্পর্ক নেই। ওই অনুষ্ঠানের পরে জানতে পারি- তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ট ছিলেন। এমন অনেক ছবি আমার কাছে আসে। আমরা এমন বিষয়ে আরও সতর্ক থাকবো।