ইসলামি দলগুলোর শীর্ষ নেতারা লড়তে পারেন যে যে আসনে

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী- আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি তৎপরতা ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বেশ জোরেশোরে। এ অবস্থায় দেশের ধর্মপ্রিয় মানুষের আগ্রহের বিষয়- ইসলামি দলগুলোর শীর্ষ নেতারা কে কোন আসনে প্রার্থী হবেন। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন- ইসলামি দলগুলোর মধ্যে বর্তমানে এগিয়ে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন। দলটির প্রতি মানুষের অনেক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এ দলের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এবারও নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে বিভিন্ন সূত্র বলছে। তবে তাঁর ভাই দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বরিশাল-৫ (সদর) আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি ওই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ ছাড়া সর্বশেষ মুফতি ফয়জুল করীম বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য মুফতি ফয়জুল করীম এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক এখনো নির্বাচন করার বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেননি। তবে দলের পক্ষ থেকে তাকে দুটি আসনে প্রার্থী করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে মাওলানা মামুনুল হককে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে দুটি আসনে প্রার্থী করতে চাই। বিষয়টি শিগগিরই চূড়ান্ত হবে বলে তিনি জানান।

খেলাফত মজলিস বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের নির্বাচন করবেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসন থেকে।

এ দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুনতাসির আলী সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। 

এ দলের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ নির্বাচন করবেন হবিগঞ্জ-২ আসন থেকে। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচনি প্রচারসহ গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল জলিল জানান, আমাদের দলের আমির তার নির্বাচনি এলাকায় ভালোভাবেই তৎপরতা চালাচ্ছেন। জোটগত হোক বা এককভাবে হোক, তিনি জয়ী হবেন ইনশাআল্লাহ।

এর আগে ২০১৮ সালে বিএনপির নেতৃত্বে গঠিত জোট জাতীয় ঐক্য থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করে ব্যাপক সাড়া পান। মাত্র দুই ঘণ্টার ভোটে ৭২ হাজার ভোট পান তিনি।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক নির্বাচন করবেন সিলেট-৫ আসন থেকে। নির্বাচনি এলাকায় ব্যাপক প্রচারকাজ চালাচ্ছেন তিনি।

দলটির প্রচার সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী জানান, এর আগে ২০০৮ সালে তিনি দলীয় খেজুরগাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নেন। সেবারের চরম বিতর্কিত নির্বাচনেও ৮৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন তিনি।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আরেক অংশের সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদী নির্বাচন করবেন না। তবে দলটির মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম কুমিল্লা-৬ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারা বিএনপির সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী।

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাদেরের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তবে দলটির নির্বাহী দায়িত্বশীল হিসেবে মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী দুটি আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং কুমিল্লা-২ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী। এ জন্য প্রাথমিক তৎপরতা চলছে বলে সাখাওয়াত হোসাইন নিজেই জানিয়েছেন।

ইসলামী ঐক্যজোটের আরেক অংশের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব নির্বাচন করবেন সিলেট-৬ আসন থেকে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করেছিলেন বলে জানান দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ইলিয়াস আতহারী।

খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বটগাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন ঢাকা-২ আসন থেকে। এ জন্য এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ওলামায়ে কেরামদের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন তৎপরতা শুরু করেছেন। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, এর আগেও ২০০৮ সালে বটগাছ প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করেছিলেন।

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির আল্লামা সরওয়ার কামাল আজিজী নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তবে দলটির মহাসচিব মুসা বিন ইজহার চট্টগ্রাম-১৬ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।