কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৬ জুলাই) আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। তাদেরকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হুদা বাংলাদেশের খবরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদেরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তারা গুলিবিদ্ধ ছিলেন। পাশাপাশি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি রয়েছেন।
সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫) ও কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)। আহতদের তাদের অস্ত্রোপচার চলছে বলে জানা গেছে।
নিহত দীপ্ত সাহার চাচা হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে তাঁর দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গীতে তার পেটে গুলি লাগে।
নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী বলেন, আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমার ছেলের কী দোষ ছিল? আমি কেমনে বাঁচব?
এ ঘটনায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ কামরুজ্জামান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গোলাম কবিরকে কল দিলে কথা বলতে রাজি হননি। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি।
এর আগে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশ শেষে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতাকর্মীদের ঘিরে হামলা চালান। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এনসিপির নেতাকর্মীরা অন্যদিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তারা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
এর আগে বেলা পৌনে ২টার দিকে সমাবেশ শুরুর আগে ২০০ থেকে ৩০০ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে যান। ওই সময় হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। সে সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময়ে মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতাকর্মীরাও দৌড়ে সরে যান। যারা হামলা চালান, তারা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে এনসিপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন।
একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। এনসিপির নেতাকর্মী ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে সমাবেশ করে এনসিপি। সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতাকর্মীদের ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটে।
.png) 
                     
                     
                     
                         
                                                 
                                                 
                                                 
                                                 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    