কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার পৌরনীতি ও সুশাসন পরীক্ষার দুটি প্রশ্ন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- এই দুই প্রশ্নে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার স্লোগান ও তার বাবাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সভা করেছেন। এসময় তারা সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বোর্ডে থাকা অন্যান্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত সরানোর দাবিও জানান।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি- বুধবার সকালে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মানবিক বিভাগের পৌরনীতি ও সুশাসন পরীক্ষা ছিল। এই বিষয়ের বহুনির্বাচনী প্রশ্নের ‘খ’ সেটের ২৫ নম্বর প্রশ্ন ছিল, ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রদূত কে?’ এবং ২৬ নম্বর প্রশ্ন ছিল, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার” উদ্ধৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সংবিধানের কোন মূলনীতির প্রতিফলন ঘটেছে?’
শিক্ষার্থীরা হাতে প্রশ্ন পাওয়ার পর থেকেই এই দুটি প্রশ্ন নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। পরে তারা বিকেলে সিলেট শহীদ মিনারে এক প্রতিবাদ সভার ডাক দেন।
সেখানে উপস্থিত হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন সিলেট জেলা শাখার সাবেক (সদ্য বিলুপ্ত) যুগ্ম-আহবায়ক ইব্রাহীম নীল বলেন- আমাদের সিলেটের শিক্ষা অফিসে, শিক্ষাবোর্ডে স্বৈরাচারের দোসররা বসে আছে। চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল কর্মকর্তাই আওয়ামীলীগের দোসর। তাদেরকে সরানো হচ্ছে না। বারবার আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি, প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু এই দোসরগুলো রয়ে গেছে। আজ তারা হাসিনাকে, শেখ মুজিবুর রহমানকে এরকম প্রশ্নের মাধ্যমে তুলে ধরছে।
ইব্রাহীম আরও বলেন- শেখ হাসিনা সবসময় বলতো- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এই বাণী কিন্তু এবার পরীক্ষায় আসছে। তার মানে বুঝা যায়, এই বোর্ডের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে যারা আছে, তারা আওয়ামীলীগের দালাল, আওয়ামীলীগের দোসর। তারা আবারো শেখ হাসিনাকে প্রত্যাশা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষাবোর্ডে সংস্কার চাই। এরকম চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তারা থাকলে বঙ্গবন্ধুর আমরা আরো অনেককিছু দেখতে পারবো। যেগুলো দেখে খুবই কষ্ট লাগছে যেখানে আমরা শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি, সেখানে আজকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রশ্ন দেখতে হয়। যা লজ্জাজনক। আমরা এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেবো।
এ বিষয়ে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন- সিলেট শিক্ষাবোর্ড নিজেরা প্রশ্ন তৈরি করে না। অন্য বোর্ডের প্রশ্ন লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করে নির্ধারণ করা হয়। সুতরাং কোনো বোর্ডই তার নিজের বোর্ডের প্রশ্ন দ্বারা পরীক্ষা নিতে পারে না। সিলেট বোর্ডের প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। একমাত্র আন্তঃবোর্ডের চেয়ারম্যান বলতে পারবেন কোনটা কোন বোর্ড থেকে করা হয়েছে। আর কেউ বলতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি আমার সাথে কথা বলতো, তাহলে হয়তো বিষয়টা বুঝতে পারতো। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে আলাপ করবো। আন্ত:বোর্ডের একটি মিটিং হবে ২ তারিখ। সেখানে আমরা এগুলো উপস্থাপন করবো।