কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
যানজট নিরসনে উপদেষ্টার ছয় দফা নির্দেশনার তিন দিন পর সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে শৃঙ্খলা ফিরেছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখে ১৫০ মিটার পর্যন্ত অস্থায়ী সড়ক বিভাজক তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মো. সরওয়ার, হাইওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান খান, অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোদ্দাছছের হোসেন ও মো. মোনতাসির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদ চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমানসহ সরাইল থানা ও খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে ঘটনাস্থলে থেকে কাজ করতে দেখা যায়।
দুপুরের দিকে দেখা গেছে, সড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই। তবে গাড়ির গতি কম। বিশ্বরোড মোড়ে ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখে ১৫০ মিটার পর্যন্ত অস্থায়ী বিভাজক তৈরি করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সকাল থেকে উপস্থিত থেকে সড়কের শৃঙ্খলা তদারক করছেন। সড়ক মেরামতের কাজ শেষের দিকে।
গত বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সরাইল বিশ্বরোড এলাকা পরিদর্শন করেন। তখন তিনি সেখানে মহাসড়কের পূর্ব পাশে বাইপাস সড়কটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে এখনো সেখানে অবৈধ বাজার ও দোকানপাট আছে। এ ছাড়া বিশ্বরোডের পশ্চিম পাশে এখনো সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড ও অর্ধশতাধিক টং দোকান আছে।
এদিকে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে বেহাল সড়কের তদারকির জন্য সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। তাঁদের প্রকল্প এলাকায় থেকে যানজট নিরসনে ও সরাইল বিশ্বরোড অংশের মেরামতকাজের তদারকিসহ সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এলাকায় না থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন উপদেষ্টা।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১২ কর্মকর্তার মধ্যে ৯ জনকে সড়কে পাওয়া যায়। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলীকে সড়কে পাওয়া যায়নি। তাঁদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদকে কুড়িগ্রামে বদলি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মীর নিজাম উদ্দিন বর্তমানে জাপানে আছেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত জাইকার একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে তিনি সেখানে যান। তিনি তদারকি কমিটির ৭ নম্বর সদস্য। অবশ্য বদলির আদেশে কোনো কারণ বলা হয়নি। তাঁর জায়গায় নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে। তাঁকে ১৪ অক্টোবর দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সওজের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কর্তব্যে অবহেলাজনিত কারণে মীর নিজাম উদ্দিনকে বদলি করা হয়েছে। বিদেশে থাকা অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে বদলি করা হয়।
সওজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে দীর্ঘ যানজট নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে কার্যকর উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ৪ অক্টোবর বিকেল থেকে সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করে সওজ। গোলচত্বর অংশে ১২ মিটার প্রস্থ ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য আর গোলচত্বর থেকে সিলেটমুখী সরাইল কুট্টাপাড়া খেলার মাঠ পর্যন্ত ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে তিন স্তরে ইট ও বালু বিছানো হচ্ছে। ঢাকা, কুমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তৈরি ইট আনা হচ্ছে। বর্তমানে ইট বিছানোর কাজ শেষ পর্যায়ে আছে।
সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গত বুধবার দুপুরে সরাইল বিশ্বরোড এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনিও যানজটে আটকা পড়ে গাড়ি ছেড়ে মোটরসাইকেলে চড়ে গন্তব্যে যান। সড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলার অভাবসহ যানবাহনগুলোর এলোমেলো চলাচল তিনিও দেখেছেন। বেহাল সড়ক মেরামত ও যানজট নিরসনে উপদেষ্টা ছয় দফা নির্দেশনা দেন।
সওজের কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবাল বলেন, প্রকল্পের এই অংশে মেরামতকাজে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা খরচ হবে। এতে সড়কে তেল-গ্যাস বাবদ প্রতিদিনের দুই কোটি টাকার লোকসান থেকে তাঁরা রক্ষা পাবেন।
আগামীকাল রবিবারের (১২ অক্টোবর) মধ্যে সড়কের মেরামত কাজ শেষ হবে। ফলে সড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলা ঠিক থাকলে আর যানজট থাকবে না বলে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য।
(মূল রিপোর্ট : প্রথম আলো)
.png) 
                     
                     
                     
                         
                                                 
                                                 
                                                 
                                                 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    