পুলিশকে ‘রিফর্ম’র কাজ চলছে : আইজিপি

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :


বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, পুলিশের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। পট পরিবর্তনের সময় কোনো পুলিশ অফিসার মারা যাননি। যারা মারা গেছেন তারা সবাই ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিচে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মানতে গিয়ে তারা জনরোষে পড়েছেন। সুতরাং মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের চাঙা করাই আমাদের মূল কাজ।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)-এর সদর দপ্তরে বিভাগের সকল ইউনিট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এ কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন এসএমপি কমিশনার মো. রেজাউল করিম (পিপিএম-সেবা)।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশের মহাপরিদর্শক আরও বলেন, বিগত সময়ে পুলিশ দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে, এ জন্য আমরা লজ্জিত। পুলিশকে রাজনৈতিক কুপ্রভাবমুক্ত করতে হবে। তাই পুলিশকে রিফর্ম করার কাজ চলছে।

আইজিপি বলেন, পরিবর্তিত পরিবেশে মামলার ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তিরা সুবিধা নিয়েছে। অনেকে বাণিজ্য করছেন। এদের মধ্যে আবার কেউ সমাজের বড় নেতাও। তবে আমারা কথা দিচ্ছি- নিরীহ যাদের আসামি  করা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে না। বরং নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে- তাদের খোঁজে বের করে তদন্তকারী কর্মকর্তা যেন অভয় দেন, আশ্বস্ত করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে সিলেটের সাংবাদিক তুরাব নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বাহারুল আলম বলেন, এ মামলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে পুলিশ। বর্তমান এসএমপি কমিশনারের প্রতি আমার তেমন নির্দেশনা দেওয়া আছে। তুরাবকে হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারবো না, কিন্তু সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চটুকু করবে।

৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, হুমকি ও চাঁদাবাজির বিষয়ে আইজিপি বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চাইলে কেউ দিবেন না, ভয়ও পাবেন না। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আছি।

আদালত প্রাঙ্গনে আসামিদের মারধরের বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন- এই বিষয়ে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। বিজ্ঞ আদালত অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করবেন।

পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কমিশনে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় সুপারিশ করেছি। বিশেষ করে বেশিরভাগ পুলিশ সদস্যকে ওভারটাইম কাজ করতে হচ্ছে। এটার জন্য তারা কোনো ভাতা পান না। এই বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি তাদের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনতে আমরা তাদের সমস্যা সমাধাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজকে আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে তাদের কথা শুনবো। এ জন্যই মূলত আমার সিলেট সফর।

মতবিনিময় সভায় র‌্যাব’র অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমানসহ পুলিশের সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।