পুলিশ কর্মকর্তা দস্তগীরকে বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে তাদের বরখাস্ত করা হয়।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) প্রজ্ঞাপন দুটি জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

বরখাস্ত হওয়া দুই পুলিশ সুপারের মধ্যে একজন হলেন- হাসিনাবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে ১৯ জুলাই সিলেটে সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত সাদেক কাউসার দস্তগীর। তিনি এ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার আগে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার শেরপুরে কর্মরত ছিলেন।

দস্তগীরকে নিয়ে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- শেরপুরের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উত্তরের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাদেক কাউসার দন্তগীরের বিরুদ্ধে সিলেট কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের রয়েছে এবং গত ১৮ ডিসেম্বর তাকে শেরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে পাঠানো হয়।

সাদেক কাউসার দন্তগীরকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত হিসেবে ধরা হবে এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

২৪’র গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ১৯ জুলাই সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন সাংবাদিক এটিএম তুরাব। এসময় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৯ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেনের আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই আবুল হাসান মো. আজরফ জাবুর।
 
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তৎকালীন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ক্রাইম ও উত্তর) মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, উপ-কমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া মামলায় আরো ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

মামলায় আরো যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- এসএমপির কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমান, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, এসআই কাজী রিপন আহমদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফতার হোসেন খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পীযূষ কান্তি দে, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, সিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর, শিবলু আহমদ, সেলিম মিয়া, আজহার, ফিরোজ ও উজ্জ্বল।

এদিকে, ১৭ নভেম্বর রাতে এ মামলার আরেক আসামি পুলিশ কনস্টেবল উজ্জ্বলকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

উজ্জলের পরদিন (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শেরপুর থেকে সাদেক কাউসার দস্তগীরকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরদিন কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে সিলেট আদালতে তোলা হয়। তখন তাকে আদালত ভবনে বিক্ষুব্ধ কয়েকজনকে লাথি-ঘুষি মারতে দেখা গেছে। আদালতে নেয়ার পর তুরাব হত্যা মামলায় সাদেক কাউসার দস্তগীরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।

বর্তমানে এই দুজন কারাগারে আছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় আর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।