সিলেট সেনানিবাসে স্থাপিত মুজিবের ভাস্কর্য অপসারণ

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

সিলেট সেনানিবাসে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়েছে। সিলেটের আলেম ও তাওহিদি জনতার দাবির মুখে ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সেটি আর দেখা যাচ্ছে না।

‘অসামাজিক ও অনৈসলামিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটি, সিলেট’র প্রধান সমন্বয়ক কওমি কণ্ঠকে বলেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ, সিলেট সেনানিবাসে স্থাপিত শেখ মুজিবের ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মুবারকবাদ জানাই। ইনশাআল্লাহ- শাহজালাল রাহ.-এর পুণ্যভূমিতে কোনো ভাস্কর্য-ম্যুরাল থাকবে না। শিরকি কর্মকাণ্ড উৎখাতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।’

এর আগে সিলেটের আলেম-জনতার জোর দাবির মুখে ৩০ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের শেখ মুজিবের ম্যুরালটি ভেঙে দেওয়া হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো শেখ হাসিনা টানা ১৫ বছর ধরেই সারা দেশে তার বাবার নামে ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও প্রতিকৃতি তৈরির মহোৎসবে মেতে উঠেছিলেন। সারা দেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ হাজারেরও বেশি ম্যুরাল, ভাস্কর্য ও প্রতিকৃতি স্থাপন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই অপ্রয়োজনীয় কর্মে উদ্যোগী ভূমিকা ছিল স্থানীয় প্রশাসনের। অনেক সংস্থা নিজ উদ্যোগেও এগুলো তৈরি ও স্থাপন করে। এর জন্য রাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই বিপুল ব্যয় অপ্রয়োজনীয় ও অপচয় বলেই মন্তব্য দেশবাসীর। 

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বড় আকারের ভাস্কর্য ও ম্যুরালগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে বা হচ্ছে। ৫ আগস্ট সিলেটের কয়েকটি স্থানের মুজিবের ম্যুরাল ও ভাস্কর্য সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের ম্যুরালটি অপসারণের দাবি তুলেন সিলেটের আলেমসমাজ। কিন্তু জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে গত ৩১ ডিসেম্বর বাদ জুমআ মহানগরের কোর্ট পয়েন্ট থেকে মিছিলসহকারে গিয়ে সেটি ভেঙে ফেলার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে এর আগের রাতেই সেটি ভেঙে দেয় কে বা কারা।

একটি সূত্র জানিয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঠেকাতে জেলা প্রশাসনই সেটি ভেঙে দেয়। 

পরে গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক ভার্চ্যুয়াল বক্তব্যের জের ধরে ওইদিন রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মিছিলসহকারে বুলডোজার নিয়ে গিয়ে ম্যুরালটি একেবারে গুঁড়িয়ে দেন।

এদিকে, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের ম্যুরালটি ভেঙে ফেলার পর সিলেট সেনানিবাসের সামনে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যও ভেঙে ফেলার জোর দাবি তুলেন আলেমসমাজ ও তাওহিদি জনতা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় এ বিষয়ে শাহপরাণ গেটে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সেই সভা থেকে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সুরমা পয়েন্টে মানববন্ধন ও  সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় সেনানিবাস গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়।‘অসামাজিক ও অনৈসলামিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটি, সিলেট’র উদ্যোগে ও ব্যানারে কর্মসূচি দুটি পালিত হওয়ার কথা ছিলো। তবে এসব কর্মসূচি পালনের আগেই সেনানিবাসের সামনে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণ করা হলো।