‘মিথ্যা মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিতে টাকা দাবি’

  • সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে উপজেলায় অবস্থান করলেও সিলেটে দায়ের করা একটি মামলায় আসামী হয়েছেন এক যুবক। শুধু তাই নয়, মামলার চার্জশীট থেকে নাম বাদ দিতে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন মামলার বাদি। চাঁদার টাকা দিয়ে বিএনপি নেতাদের খুশি করা হবে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ জানান মামলায় ভুক্তভোগী সিপন আহমদ পাঠান। তিনি সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের পাঠানপাড়ার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সিপন আহমদ পাঠান বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বৈরাচার পতনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছি। তরুণদের সংগঠিত করেছি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়াজ তুলেছি এবং এলাকায় মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। এই কাজের জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। স্থানীয় কিছু স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতা আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছিলেন। আমি ভয় পাইনি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেছি।

সিপন বলেন, ‘গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে আমি জানতে পারি সিলেটের আদালতে দায়ের করা মামলায় আসমী। মামলার বাদি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার মো. তুরণ মিয়া নামের এক ব্যক্তি। যাকে আমি কখনও দেখিনি।

তিনি বলেন, মামলার নথি ঘেঁটে দেখতে পান-গত ৪ আগস্ট সিলেট নগরীর নাইওরপুলে একটি সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেটের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুরণ মিয়া বাদি হয়ে ১৩২ জনের নামোল্লেখ করে এবং ২০০-২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৫৭৪/২০২৪। সেই মামলায় আমাকে ২৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অথচ সেইদিন আমি ছিলাম আমার নিজ উপজেলা তাহিরপুরের বাদাঘাট বাজারে। সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছিলাম।

সিপন বলেন, মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ করে বাদী তুরণ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিজেই বলেন, ‘মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। শুধু স্বাক্ষর করেছেন। আরও ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, আমাকে মামলার  চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিতে ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন বাদী তুরন মিয়া। বাদী জানান, এই মামলা সিলেট বিএনপির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনে করা হয়েছে। তাই মামলা থেকে নাম বাদ দিতে গেলে তাদের খুশি করতে হবে। যার জন্য ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। আমি তাকে কোন টাকা দিতে পারবো বলে না সাফ জানিয়ে দিয়েছি।’

লিখিত বক্তব্যে সিপন আরও বলেন, আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমি এই মিথ্যা মামলার শিকার। আমি এই মামলার কিছুই জানি না, কারণ আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলাম না। অথচ আজ আমাকে মামলার আসামি বানিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

এই মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানান।