কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
রাজধানীর কাফরুল থানাধীন এলাকায় আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। এছাড়া মোহাম্মদপুর থানার আরেক হত্যা মামলায় আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র শুনানি শেষে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
বাকিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম মজুমদার, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এ কে এম শহীদুল হক।
এদিন সকাল ১০টা ৭ মিনিটে আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কাফরুল থানার উপপরিদর্শক মো. জুয়েল ইসলাম তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। পরে বিচারক সেটি মঞ্জুর করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন আতিকুল ইসলাম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী আহসান হাবীব রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় আনিসুল হক চার, সালমান এফ রহমান ছয়, কামরুল আট, কামাল দশ, মামুন এগারো, শহীদুল সাতাশ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
উল্লেখ্য, সাবকে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গ্রেফতার করে। এর আগে তিনি সেনা হেফাজতে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তিনি সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তিনি একাধিক থানার অন্তত ২০টি মামলায় অভিযুক্ত। মামুনকে কয়েক দফায় ৭০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এই সরকারে আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। সরকার পতনের পরদিন তাঁর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ১৯৮৬ তথা অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) হিসেবে যোগ দেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশ সদর দপ্তর, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রেড-১ পদোন্নতি পান। চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে গত বছরের ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও দেড় বছর পুলিশের সর্বোচ্চ পদে থাকেন। ফলে বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় তিনিই ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।