সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান সিলেটি ইমরান গ্রেফতার

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

অর্থপাচারের মামলায় আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান সিলেটি ইমরান হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান।

সিআইডি জানায়, তার বিরুদ্ধে ১৩৩ কোটি টাকা পাচারের মামলা রয়েছে। সে মামলাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি অনুযায়ী ১৩৩ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে মামলা করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি, ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় করার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু/ছাগলকে বিদেশি ও বংশীয় গরু/ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রয় করে সাদিক অ্যাগ্রো।

জানা যায়, সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে হেফাজতে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রির কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজেপত্রে সেগুলো জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে কৌশলে হাতিয়ে নেওয়া হয়।

এছাড়াও অনুমোদনহীনভাবে জোরপূর্বক মোহাম্মাদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও দখল করে সাদিক অ্যাগ্রো। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ইমরান হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে মোট ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকা বিনিয়োগ করে রূপান্তর করেছে। যার সর্বমোট পরিমাণ ১৩৩ কোটি ৫৫ হাজার ৬ হাজার ৩৪৪ টাকা।


উল্লেখ্য, আলোচিত-সমালোচিত ‘সাদিক এগ্রো’ নামক ফার্মের মালিক ইমরান হোসেনের বাড়ি সিলেটে। তবে সিলেটে পৈত্রিক বাড়ি হলেও তাঁর জন্ম ও বেড়ে উঠা ঢাকায়। এছাড়া ইমরান হোসেনের নানার বাড়িও সিলেটে বলে জানা গেছে।

গত বছরের পবিত্র ঈদুল আযহার দু সপ্তাহ আগে ‘সাদিক এগ্রোতে’ একটি গরুর দাম দেড় কোটি ও ছাগলের দাম ১৫ লাখ টাকা হাঁকার সংবাদ চাউর হওয়ার পর আলোচনায় আসেন এর মালিক ইমরান হোসেন। আলোচনা যখন তুঙ্গে- তখন (গত বছরের ৮ জুন) ‘দ্য আরজে কিবরিয়া শো’-তে তাঁর দীর্ঘ একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

ওই সাক্ষাৎকারে ইমরান হোসেন বলেন- ‘আমার দাদার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও নানার বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলায়। আমরা ১০ ভাই-বোন। ৪ ভাই ও ৬ বোন। আমি ভাই-বোনদের মধ্যে ৯ নম্বর ও ভাইদের মধ্যে সবার ছোট। আমাদের সব ভাই-বোনের জন্ম ও বেড়ে উঠা ঢাকার কলাবাগানে। আমার বাবার স্টিলের ফ্যাক্টরি ছিলো। আমার পড়ালেখা ইংলিশ মিডিয়ামে। ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমরা ৫ বন্ধু মিলে কুরবানির ঈদে পশুর ব্যবসা শুরু করি। একপর্যায়ে ‘সাদিক এগ্রো’ নামে খামার তৈরি করে চালু করি এই ব্যবসা।’