সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ২ ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-এর শিক্ষার্থীরা। ৬ দফা দাবিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তারা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

দুপুর ১টার দিকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।  

অবরোধকালে সতর্ক অবস্থানে ছিলো পুলিশ। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

শিক্ষার্থীদের ৬টি দাবি হচ্ছে- ১) জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কতৃর্ক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সাথে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

২) ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল সহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিক ভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।

৩) উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪) কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সকল শুন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

৫) কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরীতে 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়' নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

৬) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মানাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নড়াইল, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) এ পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন- পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কেবলমাত্র কারিগরি শিক্ষা সেক্টর সংস্কারের উদ্দেশ্যেই। বাহ্যিক কোনো উদ্দেশ্যে এই আন্দোলন হচ্ছে না। সারা বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করতে এবং যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজপথ থেকে তৈরি হয়েছে 'কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ' ।

কারিগরির লাখো শিক্ষার্থীর আশা, ভরসা ও স্বপ্ন বর্তমান বৈষম্যহীন সরকার পূরণ করবে বলে আন্দোলনকারীদের প্রত্যাশা। 

আন্দোলকারীরা কওমি কণ্ঠকে জানান- আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এরই মধ্যে দাবিগুলো না মানলে সেখান থেকে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। 

(রিপোর্টার : মো. নাঈম মিয়া)