ওসমানীতে রোগীর স্বজনকে ডাক্তারের লাথি!

  • তদন্ত কমিটি

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে শারীরিকভাবে ডাক্তারের লাঞ্ছনার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্ত ডাক্তারের দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

জানা যায়, ওসমানী হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা জুবায়ের আহমদ নামক এক রোগী রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে পেটের ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর পাশ দিয়ে যাওয়া হাসপাতালটির সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তন্ময় দেবনাথকে হাতের ইশারায় ডাক দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ডা. তন্ময়। তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন- ‘তুমি কি জমিদার এসেছো যে আমাকে হাতের ইশারায় ডাকছো? আমি কি ফকিন্নির পুত?’

এসময় স্বজনরা ডাক্তার দেবনাথকে রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝাতে চেষ্টা করেন এবং তাকে রাগান্বিত না হওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু ডাক্তার দেবনাথ শান্ত হওয়ার পরিবর্তে আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে রোগীর মামাতো ভাই লক্ষ্য করে লাথি মারেন।

এ দৃশ্যটি ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন মুঠোফোনে ভিডিও করে পরে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন। মুহুর্তেই ভিডিওটি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং সমালোচনার ঝড় উঠে। সবাই অভিযুক্ত ডাক্তারের শাস্তি দাবি করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী রোগী জুবায়ের আহমদ ও তার স্বজনরা সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার খলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। পেটের বাঁ পাশে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসার জন্য কয়েক দিন আগে সিলেট আসেন জুবায়ের। প্রাথমিকভাবে এক চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করান তিনি। কিন্তু ব্যথা না কমায় সেখান থেকে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। গত ২৫ এপ্রিল (শুক্রবার) তিনি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হন। রবিবার দুপুরে পেটে তীব্র ব্যথা শুরু হলে ডাক্তারকে ডাকতে গিয়েই চিকিৎসকের এমন অমানবিক আচরণের শিকার হন জুবায়ের ও তার স্বজনরা।

রোগীর পিতা আব্দুল কাদির বলেন- আমার ছেলেটি ব্যথায় ছটফট করছিল, আমি ঔষধ আনতে বাইরে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে জানতে পারি- আমার অসুস্থ ছেলে ও এক ভাগনাকে ডাক্তার নাকি লাথি মারছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে কওমি কণ্ঠকে বলেন- ঘটনাটি অনভিপ্রেত। এ বিষয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। এখন আমরা তা নিয়েই কাজ করছি। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।