কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেট রেল স্টেশনে দুটি নতুন প্লাটফর্ম সংস্কার কাজ চলছে। দুই কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে এ সংস্কার। তবে এই সংস্কার-কাজের নকশার অনুমোদন নেই।
অনিয়মের এ বিষয় বেরিয়ে এসেছে বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিমের অভিযানের সময়।
ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে বুধবার (২৮ মে) দুপুরে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানির অভিযোগে অভিযান চালায় দুদক।
অভিযানে তারা টিকেটের অতিরিক্ত দাম আদায় ও টিকেট কেলেঙ্কারির প্রমাণ পায়। এসময় নকশা অনুমোদন ছাড়াই দুই কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ, নিলাম ছাড়াই পুরোনো রড বিক্রি ও স্টাফ কোয়ার্টারে বহিরাগতদের ভাড়া দেওয়ার মতো ঘটনার প্রমাণও পেয়েছে দুদক। তাছাড়াও অভিযানে গেটকিপারের বিরুদ্ধে টিকেট কেলেংকারির অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
বুধবার সারা দেশের রেলওয়ে স্টেশনে একযোগে অভিযান পরিচালনার অংশ হিসেবে সিলেটেও অভিযানে নামে দুদক। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক সিলেট অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন ও সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার।
দুদক জানায়, স্টেশনের পুরোনো প্লাটফর্ম থেকে উত্তোলন করা সাড়ে তিন টন রড নিলাম ছাড়া এক লাখ ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পরে এসব টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, রেলপথ নির্মাণে ব্যবহারের জন্য আনা পাথরের হিসাবও যথাযথ নয়। পাথরের এক-তৃতীয়াংশ সুনামগঞ্জের ছাতকে পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও এর কোনো লিখিত নথি দেখাতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, স্টেশনের দুটি নতুন প্লাটফর্ম সংস্কারে দুই কোটি টাকার কাজ চলছে। যার নকশার কোনো অনুমোদন নেই ।
টিকেট কালোবাজারির বিষয়েও তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দুদক। অভিযানে আজিজ নামের এক ব্যক্তি স্লিপার ক্লাসের টিকেটের জন্য ১২০০ টাকার পরিবর্তে ২০০০ টাকা দাবি করেন। যিনি স্টেশনে গেইট কিপারের দায়িত্বে রয়েছেন।
অভিযানকালে দুদক সিলেট অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন ও সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার বলেন, আমাদের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ঈদ উপলক্ষে টিকেট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানি রোধ। কিন্তু এখানে এসে একের পর এক ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র আমরা পেয়েছি।
তারা বলেন, টিকেট থাকার কথা অনলাইনে। অথচ দালালরা সেগুলো কীভাবে নিজেদের কাছে রেখে দেয়। এসব ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে।
এ বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম বলেন- আজিজ গেইট কিপার, তার টিকেট বিক্রির সুযোগ নেই। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো কাজ করে। এখন অভিযোগ উঠেছে, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।