কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে পাপড়ি রেস্টুরেন্টে ভাঙচুরের ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান চৌধুরী সিফতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকালে সিলেট মহানগরের রায়নগর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিষয়টি কওমি কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান।
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাত ৮টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা লালাবাজারে আমিনুর রহমান চৌধুরী সিফতা এবং বাজারের পাপড়ি রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী ও বাজার মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ জুবায়ের আহমদ লিটনের সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন এবং লিটনের পাপড়ি রেস্টুরেন্টে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালান সিফতার সমর্থকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লালাবাজারে ড্রেন লাইনের সরকারি সংস্কার কাজ চলছে। বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে মসজিদের সামনে থাকা যাত্রীছাউনি ভাঙা নিয়ে সম্প্রতি সিফতা ও লিটনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এক পক্ষ ছাউনি ভেঙে নর্দমা নির্মাণের পক্ষে মত দেন, অন্য পক্ষ ছাউনি রেখে কাজ করার পক্ষে অবস্থান নেন।
ছাউনি ভাঙার পক্ষে ছিলেন লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান চৌধুরী ও তাঁর সমর্থকেরা। অন্যদিকে মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ জুবায়ের আহমদ ও তাঁর পক্ষের লোকজন ছাউনি রেখে কাজ করার দাবি তোলেন।
বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার জুমআর নামাজের পর সিফতা ও লিটনের মাঝে বাক-বিতন্ডা হয়। এরই জের ধরে রাত ৮টার দিকে প্রথমে সিফতার সমর্থকরা লিটনের রেস্টুরেন্টে গিয়ে তাকে মারধর করেন। পরে দুপক্ষের মাঝে শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ।
প্রায় দুই ঘন্টা দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সিফতার সমর্থকরা লিটনের পাপড়ি রেস্টুরেন্টে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ৩০ হন আহত হন।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং রাত ১১টার দিকে পুুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সংঘর্ষ চলাকালে লালাবাজারের দুদিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঘটনার সময় তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে আটক করে পুলিশ।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান কওমি কণ্ঠকে বলেন- ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকালে নিজ বাড়ি থেকে আমিনুর রহমান চৌধুরী সিফতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ওসি বলেন- ঘটনার পরদিন লিটনের ভাই রাসেল আহমদ বাদী হয়ে থানায় মামলা দয়ের করেন। মামলায় এজাহারে ৬ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিফতা ও লিটনের মাঝে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এছাড়া দুজনই আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাচ্ছেন বলে জানা গেছে। লিটনও বিএনপি নেতা। তবে তার কোনো পদ-পদবী নেই বলে জানা গেছে।