আলী আমজদের ঘড়ির পাশে স্মৃতিফলক নির্মাণ বন্ধ

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

সমালোচনার মুখে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ির পাশে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’র নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। জুলাই শহিদদের স্মরণে এই স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হচ্ছিলো। 

নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার। 

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যাঁরা শহিদ হয়েছেন- তাঁদের স্মরণে প্রত্যেকের জন্য আলাদাভাবে ঘটনাস্থলে কিংবা ঘটনাস্থলের আশপাশে একই নকশায় ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ নামে স্মৃতিফলক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সিলেট মহানগরে চারজন শহিদের স্মরণে এমন স্মৃতিফলক নির্মাণের কাজ এ বছরের জুলাই মাসে শুরু হয়। আগস্ট মাসে সেই শেষ হওয়ার কথা। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সিলেট সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছিলো, স্মৃতিফলক নির্মাণের স্থান চূড়ান্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। এ কমিটিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শহিদদের শহীদ হওয়ার স্থান দেখিয়ে দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ঘটনাস্থল ও ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্মৃতিফলক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আলী আমজদের ঘড়ির সামনে মো. পাবেল আহমদ কামরুল ও পঙ্কজ কুমার কর শহীদ হন। তাই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেখানে এই দুজন স্মরণে স্মৃতিফলক নির্মিত হচ্ছে।

এর বাইরে বন্দরবাজার এলাকার কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় মধুবন মার্কেটের সামনে শহিদ সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাব এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ছাত্র রুদ্র সেনের স্মরণে ঘটনাস্থলের পাশে স্মৃতিফলক নির্মিত হচ্ছে।

প্রতিটি ফলক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭৫ টাকা।

তবে বাকি ৩ স্মৃতিফলক নিয়ে কোনো কথা না উঠলেও ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ির বাউন্ডারির ভেতরেই এর অংশবিশেষ আড়াল করে স্মৃতিফলক নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।

এছাড়া সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকারের কাছে সিলেটের ল্যান্ডমার্ক খ্যাত দেড় শতাব্দীর প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়িঘরের অখণ্ডতা রক্ষার নাগরিক আহবান সম্বলিত যৌথ স্মারকলিপি প্রদান করে তিনটি নাগরিক সংগঠন। সেগুলো হলো- পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট সিলেট, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেট ও সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন। 

স্মারকলিপিতে বলা হয়- সিলেট শহরের প্রাচীন স্থাপত্য “আলী আমজদের ঘড়িঘর। এ কেবল একটি স্থাপনা নয়; আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরিচয়ের প্রতীক।

প্রতিবাদ ও সমালোচনার পর অবশেষে নির্মাণকাজ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।