কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য এম সাইফুর রহমানের ১৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর)। দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি।
এম সাইফুর রহমান ১৯৩১ সালের ৬ অক্টোবর মৌলভীবাজারের বাহারমর্দনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মোহাম্মদ আব্দুল বাছির, মাতা তালেবুন নেছা। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। মাত্র ছয় বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যান। এরপর তাঁর অভিভাবক হন চাচা মোহাম্মদ সফি। শিক্ষাজীবন, গ্রামের মক্তব ও পাঠশালা শেষ করে তিনি ১৯৪০ সালে জগৎসী গোপালকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর ১৯৪৯ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে আইকম পাস করে ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডনে চলে যান। সেখানে পৌঁছার পর মত পাল্টে যায় তাঁর। ব্যারিস্টারির পরিবর্তে পড়েন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি। ১৯৫৩-৫৮ সময়কালে পড়াশোনার পর ১৯৫৯ সালে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ফেলোশিপ অর্জন করেন।
এ ছাড়া এম সাইফুর রহমান আর্থিক ও মুদ্রানীতি এবং উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিশেষায়িত শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৬০ সালের ১৫ জুলাই বেগম দূররে সামাদ রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। ২০০৩ সালে তাঁর স্ত্রী মারা যান।
২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খড়িয়ালা নামক স্থানে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার গাড়ি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। ৫-৬ ফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়া ওই গাড়িতে চালকসহ ছিলেন মোট ছয়জন। এর মধ্যে কেবল এম সাইফুর রহমানেরই মৃত্যু হয়। তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী বাহারমর্দনে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
মরহুম এম সাইফুর রহমান কর্মময় জীবনে অনন্য গুণে মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন। তাঁর সাদামাটা জীবন মানুষের দৃষ্টি কাড়ত। ছিল না চাওয়া পাওয়ার অস্থিরতা। কথা বলতেন সহজ সরল আর ইংরেজি মিশ্রিত আঞ্চলিকতায়। এ কারণে দেশ-বিদেশে সব শ্রেণির মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ছিল তাঁর।
মৌলভীবাজারের বাহারমর্দনের এম সাইফুর রহমান দেশের অন্যতম অর্থমন্ত্রী যিনি একনাগাড়ে ১২ বার সংসদে বেশ সফলতার সঙ্গে বাজেট পেশ করেছেন। তিনি উন্নয়নের যে স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়নও করতেন। এটাই তাঁর অবিচল আস্থা বিশ্বাস আর কাজের প্রতি নিখাঁদ আন্তরিকতা ও কর্তব্যকর্মে দায়িত্বশীলতার নজির। মৌলভীবাজারসহ পুরো সিলেট বিভাগেই রয়েছে তাঁর চোখ ধাঁধাঁনো উন্নয়নের ছোঁয়া।