মাঠে নামছে ইসলামি ২ দল, সঙ্গে জামায়াত : উত্তাপের আভাস!

কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজপথ আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিভিন্ন দাবি আদায়ে এবার মাঠে নামতে যাচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

সঙ্গে রয়েছে জামায়াতও। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে একযোগে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।

তাদের দাবির কেন্দ্রবিন্দু— সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির বাস্তবায়ন, জুলাই জাতীয় সনদের আইনি স্বীকৃতি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি জোটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা।

জামায়াত ৫ দফা, ইসলামী আন্দোলন ৫ দফা এবং খেলাফত মজলিস ৬ দফা দাবি তুললেও মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। বিশেষ করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন, রাজনৈতিক বৈচিত্র্য নিশ্চিতকরণ ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণের বিষয়ে তিন দলের অবস্থান আপাতত এক।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই। দাবি মানা না হলে আমাদের আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে।’

ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম অভিযোগ করেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর মানুষ যে সংস্কার প্রত্যাশা করেছিল তা হয়নি। বরং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন অশুভ বন্দোবস্ত তৈরি হচ্ছে।’

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি বৈধতা দিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

দলটির ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে বিক্ষোভ পালন করা হবে। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিক্ষোভ এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করা হবে।

তিন দলের নেতারা জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি কেবল শুরু। সরকারের উদাসীনতা অব্যাহত থাকলে রাজপথ অচল করার মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন- দীর্ঘদিন প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই তিন দল একসঙ্গে রাজপথে নামায় উত্তেজনা বাড়তে পারে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসলামপন্থি দলগুলো নিজেদের প্রভাব পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। যদি তারা বৃহত্তর জোট গঠন করতে পারে, তবে তা অন্য বড় রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। 

সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ধীরে ধীরে জোরালো হচ্ছে। সমান সুযোগ, স্বচ্ছ নির্বাচন ও রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের দাবি অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। 

তবে সমালোচকরা বলছেন- এসব দাবি মূলত রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি ও নিজেদের অবস্থান শক্ত করার কৌশল।

সরকার যখন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ইসলামপন্থি দলগুলোর একযোগে রাস্তায় নামা নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করেছে। রাজনীতির অঙ্গনে ইতোমধ্যেই উত্তেজনা বাড়ছে, আর ১৮ সেপ্টেম্বরের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন ধাপ শুরু হতে যাচ্ছে।

অনেকেই ধারণা করছেন- সেপ্টেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে রাজপথে আবারও উত্তাপ ছড়াতে পারে।