কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
গুম হওয়ার দিন বিএনপি নেতা সিলেটের ইলিয়াস আলীকে ঢাকা থেকে কারা তুলে নিয়েছিল, তদন্তের মাধ্যমে তা বের করা হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় গতকাল রবিবার (১২ অক্টোবর) যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। খবর ‘প্রথম আলো’র।
তবে কারা সেদিন ইলিয়াস আলীকে তুলে নিয়েছিলেন, তাঁদের কারও নাম উল্লেখ করেননি চিফ প্রসিকিউটর।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন বিএনপির সে সময়ের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী। প্রথম থেকেই বিএনপি ও সিলেটের মানুষের অভিযোগ ছিলো- তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে গুম করেছে। ওই সময় ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে টানা এক সপ্তাহ হরতাল পালিত হয় তাঁর উপজেলা সিলেটের বিশ্বনাথে। হরতাল চলাকালে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল ও যুবদলের তিন কর্মী নিহত হন সেখানে।
গুমের পর ইলিয়াসপত্নী ও তাঁর সন্তানেরা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে স্বামী-বাবাকে অক্ষত ফেরত চান। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার অভিযানের নাটক করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁকে আর ফেরত পাওয়া যায়নি।
এদিকে, চব্বিশের ৫ আগস্ট হাসিনার সরকারে পতনের পর গ্রেফতার হন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান। তাকে রিমান্ডে নিয়ে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বের করে ডিবি পুলিশ। এর মধ্যে ছিলো ইলিয়াস আলীর তথ্যও।
রিমান্ডে জিয়ার কাছে ইলিয়াস আলীর বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন ছিল ডিবি’র- ‘ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার পর তিনি আপনাকে ফোনে বলেছিলেন, ইলিয়াসকে ছেড়ে দাও। আপনি ওই সময় বলেছিলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে কিছুক্ষণ আগে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’
এ কথার জবাবে নীরব থাকেন জিয়া।
এছাড়া ৫ আগস্ট পরে ঘটনার সময়ের এক র্যাব সদস্য ফেসবুকে লাইভে এসে জানান- ইলিয়াস আলীকে গুমের পর নদীতে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে বা কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে আজও আনুষ্ঠানিকভাবে ইলিয়াস আলী সম্পর্কে কোনো চূড়ান্ত তথ্য জানানো হয়নি।
এবার অপেক্ষা- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বক্তব্যের।