জৈন্তাপুরে গু লি তে নি*হ*ত : বিজিবি’র মামলা, পরিবারের নেই

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

সিলেটের জৈন্তাপুরে গুলিতে যুবক নিহতের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে তাদের উপর চোরাকারবারিদের হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিজিবির নায়েক শামীম আহমদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় একজনের নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে চোরাকারবারিদের হামলা ঠেকাতে গুলি ছোড়েন বিজিবির সদস্যরা। এ সময় আলমাস উদ্দিন (২৩) নামের এক তরুণ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। বিজিবির করা মামলায় একজনের নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এর আগে বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে জৈন্তাপুরের চারিকাটায় চোরাকারবারিদের হামলা ঠেকাতে গুলি চালান বিজিবি সদস্যরা। তখন আলমাস উদ্দিন নামের যুবক নিহত হন বলে দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। তিনি জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল পূর্ব গ্রামের শরিফ উদ্দিনের ছেলে।

স্বজনদের দাবি- বিজিবির গুলিতে আলমাস মারা গেছেন। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। তবে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি।

নিহত আলমাছের চাচাতো ভাই মাসুক আহমদ বলেন, পরিবারের মধ্যে আলমাসই একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। বুধবার সকালে কাজে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর আহত অবস্থায় সড়কে পড়ে থাকার খবর পেয়ে স্বজনেরা গিয়ে উদ্ধার করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিজিবির চোরাচালানের মালামাল পরিবহন করা গাড়িতে আলমাস ছিলেন না। তিনি সড়ক দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় বিজিবির ছোড়া গুলিতে তিনি মারা যান। 

এদিকে, বিজিবির দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বুধবার বিজিবি সদস্যরা চোরাচালান প্রতিরোধে অভিযান চালান। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি গাড়ি আটক করে নিয়ে আসার সময় চোরাচালানকারিদের সহযোগীরা বিজিবি সদস্যদের উপর হামলা করেন। তখন নিজেদের নিরাপত্তা ও সরকারি জানমাল রক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন বিজিবি সদস্যরা। এ সময় চোরাকারবারিদের হামলায় এক বিজিবি সদস্য আহত হন।

এর আগে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার উল্লেখ করেন, চোরাচালানের মালামাল আটক করায় চোরাকারবারিরা হামলা চালায় ও মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি সদস্যরা সরকারি সম্পদ (অস্ত্র ও গোলাবারুদ) ও টহল দলের সদস্যদের জানমাল রক্ষার্থে নিরুপায় হয়ে ৪-৫টি ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ বিজ্ঞপ্তিতে নিহত ব্যক্তির ব্যাপারে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

তবে ঘটনার পর ফোনে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার জানিয়েছিলেন, চোরাকারবারিদের হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে বিজিবি সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এ সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। নিহত ব্যক্তির বিষয়ে বিজিবি তদন্ত করছে।

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান শুক্রবার সকালে কওমি কণ্ঠকে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়েছে। তবে নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা হয়নি।

এর আগে ঘটনার দিন জৈন্তাপুর থানার ওসি কওমি কণ্ঠকে বলেন- প্রথামিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, গুলিতেই এই যুবক মারা গেছেন।