কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে আয়োজিত একটি ইসলামি সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সৌদি আরবের বিশিষ্ট আলেম শায়খ ড. হাসান বিন আব্দুল হামিদ বুখারিকে। তিনি ছাড়াও এতে দেশ-বিদেশের বেশ কয়েকজন কারী পবিত্র কোরআনে কারিমের কেরাত পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) জুমার নামাজের পর ওই সম্মেলনটি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর আয়োজক ‘আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সংস্থা বাংলাদেশ’। প্রতিবছর বৃহদাকারে আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলনের আয়োজন করে এরই মধ্যে সংস্থাটি ইসলামি অঙ্গনে ভালো পরিচিতি পেয়েছে।
তবে এ বছর পবিত্র কাবা শরিফের সাবেক ইমাম শায়খ ড. হাসান বিন আব্দুল হামিদ বুখারিকে আমন্ত্রণ জানানোয় সম্মেলনকে ঘিরে শ্রোতাদের মধ্যে ভিন্নরকমের পুলক অনুভব করা যাচ্ছে।
‘আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সংস্থা বাংলাদেশ’ সম্মেলনের জন্য যে পোস্টার তৈরি করেছে, তাতে বলা হয়েছে যে, শায়খ ড. হাসান বিন আব্দুল হামিদ বুখারি পবিত্র কাবা শরিফের সাবেক ইমাম এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ড ও হারামাইন শরিফাইন পরিচালনা বোর্ডের সদস্য।
তবে তিনি যে মসজিদুল হারামের নিয়োগকৃত সাবেক ইমাম, সে বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যে তথ্যটুকু পাওয়া গেছে, তা হলো- ১৪৩৬ হিজরির ১৭ রমজান কাবা শরিফে তারাবির ইমামতি করেছেন শায়খ ড. হাসান।
একজন নিয়োগকৃত পদধারী ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে ওই পদের ‘সাবেক’ আখ্যা দেওয়া যাবে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম ‘আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সংস্থা বাংলাদেশ’র মহাসচিব শায়খ সাদ সাইফুল্লাহ মাদানির কাছে। তিনি বলেন যে, ড. বুখারিকে তৎকালীন সৌদি বাদশাহ কাবার ইমার হওয়ার জন্য অফার করেছিলেন, কিন্তু ইলমি গবেষণায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কায় তিনি বাদশাহর প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে।
তবে ড. হাসান বিন আব্দুল হামিদ বুখারি মাত্র একবার কাবা শরিফে তারাবি পড়িয়েছেন, এর বিরোধিতা করেছেন মহাসচিব শায়খ সাদ সাইফুল্লাহ মাদানি। তিনি এর সপক্ষে তিনটি ছবি দেখান, সেগুলোতে দেখা গেছে যে, মসজিদুল হারামে ইমামতি করছেন ড. বুখারি, আর তার গায়ে ভিন্ন ভিন্ন পোশাক।
আর বাংলাদেশেই যে, তাকে সর্বপ্রথম কাবার ইমাম বলা হচ্ছে, তেমনটিও নয়; বরং অনলাইনের নানা প্লাটফর্মেও দেখা গেছে যে, সেখানে ড. বুখারিকে কাবা শরিফের ‘সাবেক ইমাম’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে ড. হাসান বিন আব্দুল হামিদ বুখারি যে, সৌদি আরবের উল্লেখযোগ্য আলেমদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তিনি স্নাতক, মাস্টার্স ও ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটিতে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে তার যে প্রোফাইল, সেখানে তার একাধিক যোগ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির অনারবিদের জন্য যে আরবিভাষা বিভাগ, তার ডিন। একই সঙ্গে তিনি মক্কা-মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের সম্মানিত মুদাররিসও। হারামাইনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তার অনেকগুলো দারসের ভিডিও রয়েছে।
তবে এজাতীয় বড় মাপের ব্যক্তিদের দেশে আমন্ত্রণ জানালে তাদের যথাযথ পরিচিতি তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র এক আলেম সাংবাদিক। তিনি বলেছেন, তথ্য সামান্য হেরফের হলেও যে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, আমাদের অঙ্গনের অনেকে বিষয়টি তেমনভাবে জানেন না। বর্তমান যুগে কারো পরিচয় অস্পষ্ট নয়; খুব সহজেই বের করা যায়। এজন্য এ ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকা দরকার।
মূল রিপোর্ট : বাংলাদেশের খবর