কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে দাম্পত্য নিয়ে কলহের জেরে দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন বাবা। বৃহস্পতিবার দিবাগত (১৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে চুনারুঘাট উপজেলার রাণীগাও ইউনিয়নের আতিকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আত্মহত্যাকারী যুবক হলেন- আতিকপুর গ্রামের আব্দুর রউফ (৩৫)। বিষ পান করানো তার দুই শিশুসন্তান হলো- খাদিজা আক্তার (৫) ও আয়েশা আক্তার (৩)। 

ঘটনার পর হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেল) এ. কে. এম. সালিমুল হক  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান- আব্দুর রউফ ও তার স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত কলহ চলছিল। এছাড়াও তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে আব্দুর রউফের সাথে তার স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ ও ঝণের বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া হয়। এর আগের রাতেও ঝগড়া হয়। 

বৃহস্পতিবার রাতে ঝগড়ার পর স্ত্রী কোলের সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যান। এরপর আব্দুর রউফ দুই শিশু সন্তান খাদিজা ও আয়েশাকে বিষ খাওয়ানোর পর নিজেও বিষ খান করেন। 

বিষ পানের পর প্রতিবেশীরা তাদেরকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। 

পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আব্দুর রউফকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। 

রউফের ছোট ভাই সোহাগ মিয়া জানান- আমরা পার্শ্ববর্তী একটি ঘরে ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ করে চিৎকার চেচামেচির শব্দ শুনে গিয়ে দেখি আমার দুই ভাতিজি ও ভাই বিষাক্রান্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে তাদেরকে আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।

সোহাগ মিয়া জানান- আমার ভাই ও ভাবির মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত নানা বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকত। 

হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসাপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাফায়াতুল ইসলাম জানান- বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আব্দুর রউফ বিষাক্রান্ত অবস্থায় হাসপাতালে আসেন। তার দুই শিশু সন্তানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আর আব্দুর রউফ চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান।