আন্দোলনে ওসমানী হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার পদবি ব্যবহার বন্ধ, 'নামসর্বস্ব' ম্যাটসের কার্যক্রম বন্ধ, বিসিএস পরীক্ষায় বয়স বৃদ্ধিসহ ৫ দফা দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সারা দেশেও চলছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এ আন্দোলন।

তারা রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কর্মবিরতি পালন করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নেন। দুপুর ১২টা থেকে প্রায় আধা ঘন্টা অবস্থান নিয়ে তারা দাবি পূরণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। 

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান- তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। 

আন্দোলনরত এক ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন- এমবিবিএস এবং বিডিএস ডিগ্রীধারীরাই হচ্ছেন ডাক্তার। তারা নামের আগে ডাক্তার লাগাতে পারেন। কিন্তু এসএসসি পাস করে ম্যাটস এবং স্যাকমো যারা এখানে আসেন তারা ডাক্তার নন, তারা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট। অথচ নামের পূর্বে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করে তারা সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। 

তিনি বলেন, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে মামলার শুনানি হবে, আমরা চাই রায়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে যে এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রী ছাড়া কেউ নামের পূর্বে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করতে পারবে না। 

তিনি জানান, আগামীকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তারা ৫ দফা দাবিতে চৌহাট্টাস্থ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিবেন। 

এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে জরুরী বিভাগ চালু ছিল। 

এর আগে ৫ দফা দাবিতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করা হয়। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের এক বিশেষ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।সিলেট জেলা ভ্রমণ প্যাকেজ


বিবৃতিতে বলা হয়, “সারাদেশের সকল মেডিকেল কলেজের সাথে একাত্মতা পোষণ করে পূর্নাঙ্গ রায় ও ৫ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ২৩/০২/২০২৫ ইং সকাল ৮:০০ টা হতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সকল ইন্টার্ন চিকিৎসক কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছে এবং সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষার্থী ক্লাস, পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছে।”
 
চিকিৎসকদের দাবি হচ্ছে- ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিট প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রীধারীদের দিতে হবে, বিএমডিসি থেকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন অবিলম্বে বন্ধ করা, স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে শুন্য পদ পূরণ, আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দেয়া। 

এছাড়া প্রতি বছর ৪-৫ হাজার চিকিৎসক ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখা, ডাক্তারদের বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার বয়সসীমা ৩৪ বছর করা, সব ম্যাটস ও মানহীন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধসহ ম্যাটস শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদান, ম্যাটস শিক্ষার্থীদের প্যারামেডিকসে প্রবেশ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে ম্যাটস বন্ধ করা এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের দাবি তাদের। 

 

মূল রিপোর্ট : সিলেটভিউ