কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
হ্যাপিকাণ্ডে বিতর্কে আসা মুফতি তালহা ইসলামের বদ স্থগিত করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। তিনি দলটির সহকারী মহাসচিব ছিলেন।
বুধবার (১৪ মে) রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তালহার পদ স্থগিত করা হয়। জমিয়তের দপ্তর সম্পাদক মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতী তালহা ইসলাম সম্পর্কে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ ও খবরাখবর সামনে আসার প্রেক্ষিতে দলের সম্মানিত সভাপতির আদেশক্রমে কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা নূর মোহাম্মাদ কাসেমীর সমন্বয়ে ২সদস্যের একটি দলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হল । উক্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসা পর্যন্ত মুফতী তালহা ইসলামের দলীয় পদ অস্থায়ী ভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হলো।’
এর আগে স্বামীর (তালহা) বিরুদ্ধে কয়েক মাস পর পর বিয়ের অভিযোগ তুলেন ক্রিকেটার রুবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে আলোচনায় আসা সাবেক মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি। এ পর্যন্ত তার তালহা ইসলাম ৯টি বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
গত সোমবার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন হ্যাপি। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হ্যাপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস।
তিনি বলেন, নাজনীন আক্তার হ্যাপি মডেলিং ও বিনোদন জগত ছেড়ে দ্বীনের পথে আসে। গত ৭ বছর আগে নড়াইলের সাবেক এমপি প্রয়াত মুফতি শহিদুল ইসলামের ছেলে মুফতি তালহা ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু সময় পর থেকে জানতে পারেন- তালহা ইসলামের বিভিন্ন নারীর প্রতি আসক্তি রয়েছে। নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের একপর্যায়ে কয়েক মাসের জন্য বিয়ে করেন তিনি। এখন পর্যন্ত তালহা ইসলাম ৯টি বিয়ে করেছেন।
যৌতুকের জন্য হ্যাপিকে মারধর করা হয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, চারিত্রিক এসব সমস্যার পাশাপাশি তালহা ইসলাম প্রায়ই হ্যাপি ও তার সন্তানের ওপর নির্যাতন করেন। সামান্য কথার বিপরীত হলেই গায়ে হাত তুলতেন তালহা। এছাড়া যৌতুকের জন্য মাঝেমধ্যেই নির্যাতন করেছেন তিনি।
নাজনীন আক্তার হ্যাপি বলেন, তার আসল চরিত্র প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই আমি তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য তালাকের কথা অসংখ্যবার বলেছি। যতবারই আমি তালাকের কথা বলতাম ততবারই তিনি আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। তালাকের শরীয়তসম্মত অধিকারটা আমার কাছে নেই। তাকে যদি খোলা তালাকের কথা বলা হয় তখন তিনি বিশাল অ্যামাউন্ট দাবি করেন। যেমন- এক কোটি টাকা অথবা বাচ্চাকে আজীবনের জন্য দিয়ে দিতে হবে কোন দিন দেখতে পারব না- এরকম ধরনের শর্ত দেয়।
মামলা করার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে সাবেক এই অভিনেত্রী বলেন, গত পরশু মামলা করার পর রাতেই তালহা বাসায় লোকজন নিয়ে এসে আমার ৫০-৬০ লাখ টাকার ব্যবসায়িক মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এ সময় নাজনীন আক্তার হ্যাপি বলেন- এতদিন মারধরের ভয়ে চুপ ছিলাম। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় সবকিছু প্রকাশ করতে বাধ্য হচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে তালহা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তার মোবাইল সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি এখন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।