সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে শিশুসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। এতে ১৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রোববার (৯ মার্চ) সকালে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের রণভূমি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, রণভূমি গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান চৌধুরী ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন এবং স্থানীয় লোকজনের জমিজমা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা দুজন তাদের বাহিনী নিয়ে রবিবার সকাল ১০টা থেকে নানা ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমি দখল করতে যান।
এ সময় একই গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আশিক মিয়া, যুদ্ধাহত শফিক চৌধুরী এবং গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রতিবাদী হন। এক পর্যায়ে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষকালে গুলি ছুঁড়তে থাকেন লুৎফর রহমান চৌধুরী ও আব্দুস সালামের পক্ষের লোকজন। কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও পাইপগানও দেখা যায়।
এ সময় গুলিবিদ্ধ হন আশিক মিয়ার পক্ষের অন্তত ১৮ জন। এছাড়াও ইটপাটকেল ও লাঠিসোটার আঘাতে উভয়পক্ষের আরও ১০-১২ জন আহত হন।
এদিকে সংঘর্ষের সময় মাদরাসা ও স্কুলছাত্র তিনজন বাড়ি যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন। তারা হলেন— মুন্না মিয়া, বিজয় ইসলাম ও শাকিবুল ইসলাম।
আরও গুলিবিদ্ধরা হলেন- আমিরুল ইসলাম, মোজ্জাকির, তুফায়েল মিয়া, মরম মিয়া, ছাতির মিয়া, মাসুম আহমেদ, জাহিদ আলম, জয় ইসলাম, পাবেল মিয়া, শাহরুখ খান, মো. মোজাহিদ, শাহ আলম মিয়া, বারেক চৌধুরী রুবেল, টিপু মিয়া ও আব্দুস সাত্তার। এদের মধ্যে গুরুতর আহতদের দিরাই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দিরাই হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার পিন্টু দাস জানান, আহতদের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অবৈধ অস্ত্র এবং দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে আশিক মিয়ার পক্ষের অন্তত ১৮ জনকে গুলিবিদ্ধ এবং ১০ থেকে ১২ জনকে আহত করা হয়েছে। আমরা সঠিক তদন্ত করছি এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সংঘর্ষের পর পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।