এনসিপি’র কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রথম সিলেট সফর আজ

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

চব্বিশের জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বিপ্লবীদের নিয়ে দেশে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’। দলটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারীদের হওয়ায় তাদের ঘিরে দেশবাসীর আলাদা প্রত্যাশা ও আগ্রহ। সারা দেশে দলের বার্তা পৌঁছে দিতে ও জনপ্রিয়তা বাড়াতে চলতি জুলাইয়ে দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি।

ইতোমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জে ‘জুলাই পদযাত্রা’ ও সমাবেশ করেছে দলটি। আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) সিলেট ও সুনামগঞ্জে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সিলেটের কর্মসূচি সফল করতে এনসিপি জেলা ও মহানগর আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার বিকালে সিলেট মহানগরে প্রচারপত্র বিলি করেছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

দলটির স্থানীয় নেতারা বলছেন- প্রথম সমাবেশেই সিলেটে চমক দেখাতে চান তারা, গড়তে চান ইতিহাস। ২৫ থেকে ৩০- এমনকি ৪০ হাজার লোকেরও সমাগম ঘটতে পারে সিলেটের সমাবেশে। 

এর কারণ হিসেবে এনসিপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যরিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ বলেন- নতুন রাজনৈতিক দল, তাছাড়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা হটানোর বিপ্লবীদের দল হওয়ায় এনসিপি নিয়ে জনসাধারণের ব্যাপক আগ্রহ। মানুষ তাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূল নায়কদের এক নজর দেখতে হলেও অন্তত একবার সমাবেশে আসবেন। সে হিসেবে জনসমাগম ৪০ হাজারও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সিলেটের কর্মসূচি নিয়ে গত ২২ জুলাই দুপুরে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় নেতারা সাংবাদিকদের জানান- শুক্রবার (আজ- ২৫ জুলাই)  জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সিলেট জেলায় পদযাত্রা করবেন। বিকেল ৫টায় তারা সিলেটে পৌঁছাবেন এবং মহানগরের চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জমায়েত হয়ে পদযাত্রা শুরু করবেন। আম্বরখানা থেকে সুবিদবাজার হয়ে রিকাবীবাজার পয়েন্ট, লামাবাজার, মির্জাজাঙ্গাল, তালতলা, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার হয়ে আবারও শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে এসে পদযাত্রা শেষ হবে।

পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে বক্তব্য রাখবেন গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারোয়ার নিভা এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

এছাড়া আরও কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন ও পদযাত্রায় অংশ নেবেন।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি পুরনো চিন্তা-ধারা ছেড়ে নতুন পথে এগিয়ে যেতে চায়। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছাতে চাই আমরা। ইতোমধ্যে দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।

এদিকে, গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজারে এনসিপি’র কর্মসূচিতে হামলা হওয়ায় সিলেটে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকেই সমাবেশস্থল ও আশপাশ এলাকায় নজরদারি রাখছে পুলিশ। দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সিলেট ছাড়ার আগ পর্যন্ত পুলিশ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কওমি কণ্ঠকে বলেন- ‘এনসিপির কর্মসূচিকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) রাত থেকেই বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। শুক্রবার মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও সড়কে থাকবে পুলিশ মোতায়েন। দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নিরাপত্তা চেয়েছেন, আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কওমি কণ্ঠকে বলেন- ‘এখন পর্যন্ত উদ্বেজনক কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। সিলেট রাজনৈতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থানের শহর। এখানো কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না বলেই আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। তবুও পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে।’