- ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন
কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় বৃটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বিনামূল্যে একটি ব্যয়বহুল ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। সেন্ট্রাল লন্ডনে ওই ফ্ল্যাটটি দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। মোতালিফ লন্ডনে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
টিউলিপকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে। নথিপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন বলছে- টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। আবদুল মোতালিফ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। টিউলিপের খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে মোতালিফের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথির বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়- টিউলিপ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। বিনামূল্যে পাওয়া ওই ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি তাকে দেয়া হয়। এর আগে ২০০১ সালে সেটি ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে কেনা হয়। ফ্ল্যাটটির বর্তমান দাম নথিতে উল্লেখ করা হয়নি। তবে একই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাট গত আগস্টে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভোটার নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট নথি থেকে জানা গেছে- চলতি শতকের শুরুর দিকে কিংস ক্রসের ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন টিউলিপ সিদ্দিক। এরপর বেশ কয়েক বছর সেখানে তার ভাই-বোনেরা ছিলেন। পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে টিউলিপের দাখিল করা আর্থিক বিবরণীতে দুটি ফ্ল্যাট থেকে ভাড়া পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানাশোনা আছে এমন একজন ব্যক্তি বলেছেন- আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের দুর্দিনে তাকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের মা-বাবা। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নিজের মালিকানায় থাকা ‘একটি সম্পদ’ টিউলিপকে দিয়েছিলেন।
বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী আবদুল মোতালিফ দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন। ভোটার নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট নথি থেকে জানা গেছে, ওই এলাকায় মোতালিফের ঠিকানায় মজিবুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বসবাস করেন। মজিবুলের বাবা ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
আবদুল মোতালিফ কিংস ক্রসের ওই ফ্ল্যাট কেনার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পরে সেটি নিয়ে কী করেছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি।
আর টিউলিপের ওই ফ্ল্যাট পাওয়ার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতার খবর ‘ভুল’ বলে দাবি করেন তার (টিউলিপ) একজন মুখপাত্র।
টিউলিপকে বিনামূল্যে এই ফ্ল্যাট দেয়ার খবর এমন সময় সামনে এলো যখন ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মাসে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।