সিলেটে প্রার্থীদের নিরাপত্তায় যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ মো. ওসমান হাদীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। চোরাগুপ্তা হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে দেশজুড়ে নতুন করে করেছে চিরুনি অভিযান। নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’। 

নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা ও কর্মপন্থা অবলম্বন করেছে সিলেটের পুলিশও। এ বিষয়ে রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) কওমি কণ্ঠ’র সঙ্গে কথা বলেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার আবদুল কুদ্দুস (পিপিএম- সেবা) ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার ‍উল আলম। 

এদিকে, শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা আবেদন করলে তাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হবে।

তবে নিরাপত্তা ও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’র মতো কঠোর অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিলেট-১ (সদর-মহানগর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। 

রবিবার বিকেলে তাঁর নির্বাচনি কার্যালয়ে সিলেটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ প্রস্তাব দেন তিনি।

খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন- ঢাকায় ওসমান হাদীর উপর যে পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়েছে, তা সকল রাজনৈতিক কর্মীর জন্য উদ্বেগের। অতীতে বিএনপি সরকার সন্ত্রাস দমনে অপারেশন ক্লিন হার্টের মতো অভিযান পরিচালনা করেছিল। এছাড়া সবগুলো জাতীয় নির্বাচনের আগেই সন্ত্রাসী ও পেশাদার অপরাধীদের দমনে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে হলে অতীতের মতো বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা জরুরি। বিষয়টি-ই এ মুহূর্তে সরকারের ‘টপ প্রায়োরিটি’ হওয়া উচিৎ।

নিরাপত্তা বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার ‍উল আলম কওমি কণ্ঠকে বলেন- প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, কথা বলছি। সব থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সময়ে সময়ে প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য। এছাড়া আমরা প্রার্থীদের গতিবিধির উপর নজর রাখছি। তাদেরকে বলা হয়েছে- যে কোনো ধরনের অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে পড়লে পুলিশকে তাৎক্ষণিক অবগত করতে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হবো এবং নিরাপত্তা দিবো। আমরা সর্বদা সতর্ক অবস্থায় আছি।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার আবদুল কুদ্দুস (পিপিএম- সেবা) কওমি কণ্ঠকে বলেন- আমরা প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তারপরও ঢাকার ঘটনার পর আমরা নতুন করে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছি। প্রার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দাসহ বিভিন্ন ইউনিটের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে ৬ নভেম্বর সিলেট-১ ও সিলেট-৩ আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে নিরাপত্তাবিষয়ক  বৈঠক করেন এসএমপি কমিশনার। সেদিন তিনি প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রস্তুত বলে জানান।

ওই বৈঠকে কমিশনার মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশি শক্তির সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে একটি ফর্মুলাও উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের কিছু স্বেচ্ছাসেবী যুবশক্তি নিয়ে টিম গঠন করে পুলিশকে সহায়তা করতে পারে। পুলিশের প্রশিক্ষণ ও নির্দেশে তারা নির্বাচনি সভা-সমাবেশ ও সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে করতে পারে সহযোগিতা। 

তবে এ ক্ষেত্রে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।