রাসুল সা.-কে কাউবয় বলা অপরাধ

ইবনুল কালাম :

কাউবয় শব্দটির সরল প্রতিশব্দ হিসেবে রাখাল শব্দটি ধরা যেতে পারে। রাখাল অর্থ ধরে যদি শব্দটি নিয়ে চিন্তা করা হয়, তাহলে শব্দটি একটি দীন দৃশ্যপট দাঁড় করাবে। রাসুল সা.-কে যদি কেউ ‘কাউবয়’ বলে, তাহলে দৃশ্যপটে ওই দীন অবয়বটিই ফুটে ওঠে। আর রাসুল সা.-কে ওই দৃশ্যে ফুটিয়ে তোলা একজন মুমিনের জন্য কখনোই শোভনীয় হতে পারে না। এটি যদি ধর্মের ধারক-বাহক পর্যায়ের কেউ হন, তাহলে সেটি অবশ্যই অপরাধ।

হাদিসে এসেছে, রাসুল সা.-সহ সব আম্বিয়া আলাইহিস সালাম বকরি চরিয়েছেন। কিন্তু বকরি চরিয়েছেন বলেই কি তাদেরকে কাউবয় বা রাখাল বলা যাবে? এর সরল উত্তর হলো, না। নবিজি সা.-কে কাউবয় বলার সুযোগ নেই। 

রাসুল সা.-এর জীবনী অধ্যয়নে জানা যায়, নবিজি তার দুধ ভাইয়ের সাথে বকরি চরাতে গিয়েছেন। তবে নিয়মিত যাওয়ার কথা নেই। রাখাল বা কাউবয় এই পেশার সাথে সম্পৃক্তদের বলা যেতে পারে। কিন্তু যারা মাঝেমধ্যে বা কিছুদিন এসব কাজ করেছেন, তাদেরকে কাউবয় বলার সুযোগ নেই। সে জন্য নবিজিকে কাউবয় বলাও অযৌক্তিক।

এ ছাড়া যে গরু চরানোর পেশায় নিয়োজিত, তাকে কাউবয় বলা হয়। কিন্তু রাসুল সা. গরু চরিয়েছেন বলে হাদিস বা সিরাতের কিতাবগুলোতে উল্লেখ নেই। সে জন্য নবিজিকে কাউবয় বলা বাস্তবতার বিপরীত।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, রাসুল সা.-এর শানে এমন শব্দ ব্যবহার করার অনুমতি নেই, যার মাধ্যমে নবিজিকে খাটো করে দেখার সুযোগ তৈরি হয়। শব্দটির অর্থ ও বাস্তবতায় মিল থাকলেও বলার সুযোগ নেই। যেমন ইহুদিরা নবিজিকে খাটো করে বলতেন রায়ীনা। এর একটি শুদ্ধ, অপর অর্থ হেয়কর। ইহুদিরা হেয়কর অর্থে নবিজিকে রায়ীনা বলত। কিন্তু সেদিকে না তাকিয়ে এবং ইহুদিদের লুকানো রহস্য না জেনে কোনো কোনো সাহাবি শুদ্ধ অর্থের দিকে তাকিয়ে শব্দটি নবিজির শানে প্রয়োগ করতে শুরু করেন। তখন আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাজিল করে ওই বিষয়ে সতর্ক করেন এবং শব্দটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। 

এর থেকে বুঝা যায়, অর্থ শুদ্ধ হলেও নবিজির শানে শব্দ ব্যবহারে সতর্কতার পরিচয় দিতে হবে। যেন কোনোভাবে অসম্মানের সুযোগ তৈরি না হয়। সে জন্য দ্বীনের দাঈদের অবশ্যই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের বুঝবার তাওফিক দান করেন। আমিন।