হাসিনার বিদ্বেষমূলক বার্তা প্রচার করলেই ব্যবস্থা

কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হেট স্পিচ বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই কেউ তা প্রচার করলে, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গনে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তিনি (হাসিনা) বিদেশের মাটিতে বসে নানা ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে এই সরকার ও ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া এবং মামলার সাক্ষীদের ব্যাপারে উসকানিমূলক বক্তব্য রেখে চলেছেন, যা এই মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এ আচরণের মাধ্যমে তিনি এই বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করার একটি অপচেষ্টা করছেন বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি।’

আদালত এ বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনের নিষেধাজ্ঞা তো আছেই। তবুও কেউ তা প্রচার করলে যদি তা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে তাহলে ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেব।’

পাশাপাশি হাসিনার যে সমস্ত ঘৃণাসূচক ও বিদ্বেষমূলক বার্তা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, সেগুলোকে প্রচারের ব্যাপারে গণমাধ্যমকে সতর্ক করে তিনি জানান, আমাদের সবার লক্ষ্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। এ সমস্ত হুমকি দেওয়ার কারণে সাক্ষী ভয় পেতে পারেন বা সাক্ষ্য দেওয়ার আগ্রহ হারাতে পারেন, যা সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার জন্য মোটেও কাম্য নয়।’

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার শিকার ও আহত ব্যক্তিদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে ও ন্যায় বিচার পাবার প্রক্রিয়াকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এ সময় তিনি গণমাধ্যম ও দেশের জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।

উল্লেখ্য, বিগত ৫ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

পাশাপাশি যেসব বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে সেসব সরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশনা দেয় ট্রাইব্যুনাল।

তবে শুধুমাত্র বিদ্বেষ ছড়ায়, শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যগুলো প্রচারে এ নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে, যেন তা ট্রাইব্যুনাল বা এর তদন্ত সংস্থার কাজের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত না করতে পারে।

গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে যাবার পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। 

ভারত থেকে ইতোমধ্যে তার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কিছু কথোপকথনের রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়, যেখানে তিনি অগোচরে দেশে ফিরে আসাসহ নানান ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। 

এসব বক্তব্য সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করতে পারে এবং বিচারের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে- এ আশঙ্কা থেকেই মূলত এ আবেদন করা হয়।

 

মূল রিপোর্ট : বাসস