কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
হবিগঞ্জে ভুয়া জামিননামা দিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে গেলেন মাদক মামলার ৪ জন আসামি। বিষয়টি নিয়ে হবিগঞ্জের আদালতপাড়াসহ সর্বত্র তোলপাড়। চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
৪ আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার শিমুলগঞ্জ গ্রামের আব্দুল কদ্দুছ মিয়ার ছেলে রুয়েল মিয়া, একই উপজেলার কিরণ মিয়ার ছেলে আলী হোসেন, জগন্নাথপুর উপজেলার পাগলা গ্রামের সজলু মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার কিরগাও গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে সুয়েব মিয়া।
জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি জেলার মাধবপুর উপজেলায় ৩৫ কেজি গাজাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়ে ওই ৪ মাদক কারবারি। এরপর তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারের পর আসামিপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট ফয়সল আদালতে বেশ কয়েকবার তাদের জন্য জামিন আবেদন প্রার্থনা করেন। কিন্তু বিজ্ঞ বিচারকরা জামিন দেননি।
গত ২৬ জানুয়ারিও আসামিদের জন্য আদালতে জামিন আবদেন করেন তাদে আইনজীবির। কিন্তু মিলেনি মঞ্জুরি। এ অবস্থায় হঠাৎ করে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) তারা কারাগার থেকে বের হয়ে যান।
বিষয়টি জানতে পেরে (৩০ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার অ্যাডভোকেট ফয়সল আদালতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি নিশ্চিত হন- তার আসামিরা ভুয়া জামিননামা তৈরি করে জিআরও অফিসের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করিয়ে তারা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
অ্যাডভোকেট ফয়সল জানান- ‘আমি আদালতে একাধিকবার জামিন আবদেন করে মঞ্জুরি পাননি। পরবর্তীতে আমিহাইকোর্টে কাগজপত্র পাঠাতে চাইলে ৪ আসামির স্বজনরা এর প্রয়োজন নেই বলেন। তারা বলেন- আসামিরা জামিন নিয়ে বের হয়ে গেছেন। বিষয়টি জানার পর আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। পরে খোঁজ নিয়ে জানি- ভুয়া জামিননামা তৈরি করে জি.আর.ও অফিসের মাধ্যমে তা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সেটি দেখিয়ে আসামিরা জেল থেকে বের হয়ে যান।
হবিগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর (ওসি) নাজমুল হোসেন বলেন- জানার পর থেকেই আমরা খোঁজ নিচ্ছি- কারা ভুয়া জামিননামা তৈরি করলো ও কীভাবে সেটি কারাগারে গেলো।
তিনি বলেন- পুরো বিষয়টি জানার পর বলতে হবে। তবে এ ঘটনায় জিআরও অফিসের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. মুজিবুর রহমান বলেন- প্রতিদিনকার নিয়মেই আদালত থেকে আমাদের কাছে জামিননামা আসে। সেই অনুযায়ী বন্দীরা ছাড়া পান। তবে সেটি যে ভুয়া জামিননামা ছিলো- বিষয়টি আমাদের জানা ছিলো না।