কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় নিহত রুম্মান আহমদের (২২) জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) বাদ জুম্মা সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন সদর উপজেলার লুসাইন গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাজা এবং পরে পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
রুম্মান লুসাইন গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে।
নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে ওসমানী বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের বোর্ডিং ব্রিজের (বিমানে উঠার সিঁড়ি) চাকা বদলানো হচ্ছিল। সানরাইজ নামক কারিগরি প্রতিষ্ঠানের টেকনিশিয়ানরা এই কাজ করছিলেন। একটি চাকা খোলামাত্র সেটি সজোরে গিয়ে রুম্মান ও তার সহকর্মী এনামুল হককে (২৫) ধাক্কা মেরে সেটি বিস্ফোরিত হয়ে যায়। আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেখানে আইসিইউ-তে সিট খালি না থাকায় গুরুতর আহত রুম্মানকে নেওয়া হয় জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও খালি ছিলো না আইসিইউ। রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মারা যান রুম্মান।
২০২৩ সালে সিলেট সদর উপজেলার কালাগুল তাওয়াক্কুলিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় পাস করে রুম্মান। পরে ভর্তি হন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় আলিম প্রথম বর্ষে। ৩ বোন ও ২ ভাইয়ের মাঝে রুম্মান ছিলেন সবার বড়। বাবা কৃষক। ফলে পরিবারের দায়িত্ব অর্ধেকটা কাঁধে নিতে হয় তার। রুম্মান ৩ বছর আগে তার এক চাচার মাধ্যমে সানরাইজ নামক কারিগরি প্রতিষ্ঠানে কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু বৃহস্পতিবারে দুর্ঘটনা ভেঙে দেয় রুম্মানর পরিবারের স্বপ্ন-ডানা।
পরিবারের লোকজনের দাবি- সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যদি আইসিউই সেবা পেলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত।
ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি- গুরুতর আহত অবস্থায় রুম্মানকে ওসমানীতে নিয়ে আসা হলেও আইসিউই খালি না থাকায় তাকে এখানে ভর্তি না করে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা.সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন- বিমানবন্দর থেকে বেলা আড়াইটার দিকে দুজনকে নিয়ে আসা হয়েছিল। এরমধ্যে একজনের আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমাদের এখানে সবগুলো আইসিইউ বেড ফিলাপ ছিল। তাই তারা এখানে ভর্তি না হয়ে অন্য হাসপাতালে চলে যায়।
রুম্মানের পরিবার জানায়- প্রাথমিকভাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও সানরাইজ কোম্পানির পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে কিছু সহযোগিতা করা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।