- সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
ভূমি আত্মসাত করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এবং প্রতিনিয়ত রাস্তা-ঘাটে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন জামাত নেতা শাহ্ নুর আহমদ ও তার ছেলে এবং তার সহযোগীরা। তাদের আরেক সহযোগী ৫নং টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেনের সহযোগীরা আমার স্বাভাবিক জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তারা একটি চক্রের মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন সিলেট নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের মীরাপাড়াস্থ মরহুম আব্দুল গফুরের ছেলে রুহুল আমিন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন বলেন, আমার ভূমি আত্মসাত করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন জামাত নেতা শাহ্ নুর আহমদ ও তার ছেলে এবং তার সহযোগীরা। এলাকার সন্ত্রাসীদের দ্বারা আমি ও আমার পরিবার অসহায়। আমার ভূমি আত্মসাত করতে বিভিন্ন সময় জেল জুলুম মামলা হামলা করে হয়রানী করছে শাহ্ নুর আহমদ খাঁন ও তার ছেলে এবং তাদের সহযোগীরা। তারা প্রতিনিয়ত রাস্তা-ঘাটে আমাকে ও আমার ছেলেদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমার মৃত বাবার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে। আমি ও আমার ছেলেরা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে কোনো ধরনের সম্পৃকতা নেই। তারপরও তারা ৫ আগস্টের পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক মামালায় ফাঁসানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমার বাবা মৃত আব্দুল গফুর পিতা মৃত আব্দুল গনি গত ৩৩ বছর আগে মারা গিয়েছেন। কিন্তু গত ৪ অক্টোবর ২০২৪ সালের কোতয়ালী মডেল থানার জি.আর. ৪৪৭ নং মামলায় ১৮ নং আসামী তাকে করা হয়েছে। তবে বাবার পিতার নাম সঠিক ছিলো না, কিন্তু বাসার নাম্বার সঠিক থাকায় আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, এলাকার সন্ত্রাসীদের মূল হোতা এভারগ্রীন হাউজিং এর মালিক আব্দুর রব গং এবং ৫নং টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন, লন্ডন প্রবাসী হিরা মিয়ার মদদে মিরাপাড়া এলাকার জমশেদ ডাকাতের (জমশেদ আলী) ছেলে সুমন আহমদ (৪১) ও টিলাগড় শাপলাবাগ এলাকার মৃত আব্দুল রহমানের ছেলে অলি আহমদ (৩২), সাগরদিঘীর পাড় এলাকার ছুরত আলী এবং তাদের আরেক সহযোগী বিয়ানীবাজারের উত্তরবাগ এলাকার মৃত তৈয়ব আলী খানের ছেলে শাহ্ নুর আহমদ খাঁন ও তার ছেলে আসাদ খাঁন এবং তাদের সহযোগীরা (বর্তমানে সিলেট নগরীর কাজীটুলা (১৮ বিহঙ্গ) এলাকার বাসিন্দা) আমার স্বাভাবিক জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে। আমার জায়গা দখল নিতে তারা প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। বিভিন্নভাবে জোরেবলে জায়গা নেওয়ার পায়তারা করে এবং বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় চিহ্নিত ছিনতাইকারী ফয়জুর রহমান তারেক, দুলাল আহমদ, দিলাল মিয়াসহ দুষকৃতিকারীদের দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিয়া জেল খাটানোর চেষ্টা করে আসছে। এমনকি তারা আমার টুলটিকর মৌজায় ২৪৩ নং এসএ খতিয়ানের ৩৪১ নং দাগের ও ২১৭ নং এসএ খতিয়ানের ৩৪২ নং দাগের এবং আমাদের (রম্নহুল আমীন গং) নামজারীকৃত ৮৮৬ নং খতিয়ানের ৩৪৮ হতে ৩৫৩ নং দাগের মৌরসী ও খরিদা সূত্রে ক্রয়কৃত জায়গার রায়-ডিক্রি ও জারী থাকা স্বত্তেও আমার জায়গা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠছে। নামজারী ও খাজনা পরিশোধ করে ভোগ দখল থাকা অবস্থায় তারা আমার জায়গা অন্যের কাছে বিক্রয় করা চেষ্টা করছে। এদিকে ৫ আগষ্টের পর সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন গা ডাকা দিয়ে এখন জামাতী নেতা শাহ্ নুর আহমদ খাঁনের মদদে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে যাচ্ছে।
রুহুল আমিন বলেন, আমি সিলেট নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের মীরাপাড়াস্থ মরহুম আব্দুল গফুরের ছেলে রুহুল আমিন। সদর উপজেলার দেবপুর মৌজার জে.এল.নং-৯৬, ছাপা ৭৭১নং খতিয়ানের ১৪৩৭ দাগে ১১৫ শতক জায়গার মালিক ছিলেন আমার দাদা গনি মিয়া। পরবর্তীতে বিভিন্ন দলিলে আমার বাবা আমার মাতা ছুরেতুন নেছা বরাবরে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে ছুরেতুন নেছা ০৪/১২/১৯৮৮ইং তারিখে টিলাগড়স্থ আব্দুছ ছালাম বরাবরে বিনিময় করনে। পরবর্তীতে উক্ত আব্দুছ ছালাম মারা যাওয়ার পর তার ছেলে সেলিম আহমদ গং এর কাছ থেকে ০৫/০৮/১৯৯৮ইং তারিখে রেজিস্ট্রারীকৃত-৯৪৩৯নং বিনিময় দলিল মূলে আমার মাতা ছুরেতুন নেছা মালিক হন। পরবর্তীতে আমি রুহুল আমিন ও আমার স্ত্রী পারভীন বেগম উক্ত জায়গা বিভিন্ন দলিলে খরিদ করে ৭৬৪৫ খতিয়ান ও ৯৬০৩ এবং ২০৫৪ খতিয়ানে নামজারী ও মাঠ ফরসা নিয়া ভোগ দখল করিয়া আসছি। আমার ও আমার স্ত্রীর খরিদা স্বত্বের ১৪৩৭ দাগের জমির উপর ৩ তলা ফান্ডেশন দিয়ে বিল্ডিং নির্মানাধীন রয়েছে। এবং এই জাযগার কাগজ দিয়ে ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক তালতলা শাখায় মরগেজ রেখে নিউ এমদাদিয়া লাইব্রেরীর প্রোপাইটার মো. নিজাম উদ্দিনকে লোন তুলে দেই। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকে মরগেজ থাকা অবস্থায় কিভাবে শাহ্ নুর আহমদ খাঁন ২০০৭ ও ২০০৮ সালে ৫৫৯৭ ও ৩৬৬৭ নং দলিল করে মালিকান দাবি করেন। যা দলিল আইনে সর্ম্পুন অবৈধ। এই অবৈধ দলিল বাতিলের জন্য মাননীয় যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা নং ২২৯/২৪ মামলা চলমান রয়েছে। এঅবস্থায় আমাকে হয়রানির উদ্দেশে শাহ্ নুর আহমদ খাঁন মাননীয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, সিলেট। ফৌজদারী ৪৮/২০২৪ নং মামলা করেন, পরর্বতিতে আমি আদালতে নামজারী, প্রিন্ট পরসা ও খাজনার রশিদ দাখিল করিলে উক্ত মামলা মাননীয় আদালত তা খাজির করে দেন। পরর্বতিতে আবারও হয়রানির উদ্দেশে মাননীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ২য় আদালত, সিলেট এ চাদাবাজি ও ভুমি আত্মসাত মামলা (মামলা নং ৪০১ ও ৪৯০) সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন শাহ্ নুর আহমদ খাঁন ও তার ছেলে আসাদ খাঁন এবং তাদের সহযোগীরা। তাদের দেওয়া মামলায় সিআইডি পুলিশ তদন্তে আসলে আমার জায়গার মালিকানার নামজারী, প্রিন্ট পরসা ও খাজনার রশিদ দেওয়ার পরও ঘুষ খেয়ে মিথ্যা রির্পোট প্রদান করেন সিলেটে মেট্রা ও জেলা সিআইডি পুলিশের এসআই (নিরস্ত্র) মো. আব্দুল মুকিত।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, দেবপুর মৌজায় আমার ১৪৪৬, ১৪৪৯, ১৪৫০, ১৪৬৭, ১৩৫৫, ১৩৫২ দাগের ভুমি জোরপূর্বক দখল নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে শাহ্ নুর আহমদ খাঁন ও তার সহযোগীরা। এদিকে দেবপুর মৌজায় বিভিন্ন দাগ নিয়ে তাদের সাথে মাননীয় যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা নং ২০৫/২৩ মামলা চলমান রয়েছে। এবং এই জায়গার উপর যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ রয়েছে। তারপরও তারা বিভিন্ন সময় উক্ত ভূমিতে কাম কাজ ও বাসাবাড়ী বানানোর পায়তারা করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। সন্ত্রাসীদের মূল হোতা ও হাউজিং এর মালিক আব্দুর রব, আব্দুস ছালাম গং এবং কুতুব উদ্দিন, লন্ডন প্রবাসী হিরা মিয়ার কেয়ারটেকার অলি আহমদ (৩২), সন্ত্রাসী সুমন আহমদ (৪১) এবং রম্নমন আহমদসহ এই আবাসন প্রকল্পের নিজস্ব ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা আমকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে উলেস্নখ করে রুহুল আমিন এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।